সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'তোমার শরীর জুড়ে নেশার মাতম, ঠোঁটে আগলে রাখা চুমুর সমুদ্র...'- কালীঘাট মেট্রো স্টেশনে সেই প্রেম সাগরেই ডুব দিয়েছিলেন তরুণ-তরুণী। কোনওকিছুর পরোয়া না করে 'ঠোঁটে ঠোঁট রেখে ব্যারিকেড' গড়লেন তাঁরা। খাস কলকাতার মেট্রো স্টেশনে গভীর চুম্বনরত যুগলের সেই ভিডিও নিমেষে ভাইরাল। চারদিকে ছি ছি-কার! কত কটুক্তি। শিক্ষা-দীক্ষা নিয়েও উঠল প্রশ্ন। মেট্রো স্টেশনের সেই চুমু-চর্চাতেই এবার স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের (Swastika Mukherjee) প্রশ্ন, "ভালোবেসে চুমু খাচ্ছে, সেটাতে গাত্রদাহ কেন?"
মেট্রো স্টেশনের ভাইরাল চুমু চর্চা নিয়ে প্রতিদিন রোববার ডট ইন-এর জন্য কলম ধরেন অভিনেত্রী। স্বস্তিকার কথায়, "গোটা পৃথিবী জুড়ে যেখানে এত নৈরাজ্য, জ্বালা, যন্ত্রণা, খেয়োখেয়ি, মারপিট, ঈর্ষা- সেখানে দুটো মানুষ, তারা ভালোবেসে চুমু খাচ্ছে, সেটাতে গাত্রদাহ কেন? ভালোবাসা থেকে যাতে মানুষের আশা-ভরসা, বিশ্বাস বিলুপ্ত না হয়, তার জন্য তো যাদের ভালোবাসি, তাদের হাত ধরে হাঁটা উচিত, তাদের চুমু খাওয়া উচিত। সেটা জনসমক্ষে অশ্লীল পর্যায়ে চলে না গেলে কারও কেন এটা নিয়ে মাথাব্যথা থাকবে? যাদের জীবনে প্রেম আছে, ভালোবাসা আছে, তাদের সবার উচিত ঘণ্টায় ঘণ্টায় মেট্রো স্টেশনে গিয়ে চুমু খাওয়া।" অভিনেত্রীর প্রশ্ন, ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে এটা একটা বিষয় হল চর্চা করার মতো?
প্রেমের প্রকাশ স্বাভাবিক, সহজাত। সেই প্রকাশ কোনও বাধা মানে না। কত ভিড়ের মাঝেই তো প্রিয়জনের চোখে চোখ রেখে হারিয়ে যাওয়া যায়! প্রেমের আবহ এমনই যে ক্ষণে ক্ষণেই মনে হয়- 'সমাজ সংসার মিছে সব/মিছে এ জীবনের কলরব...।' যে ভিডিওটি সকলের টাইমলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে কালীঘাট স্টেশন। আশেপাশে গুটি কয়েক যাত্রী। তাঁদের উপস্থিতি হেলায় উপেক্ষা করে একে অপরের ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে প্রেমে মগ্ন। আর সেই মুহূর্ত মুঠোফোনে বন্দি করে নেটপাড়ায় যিনি ছড়িয়ে দিলেন, তাঁর খোঁজ কেউ করলেন না কেন? প্রশ্ন স্বস্তিকার। তাঁর সংযোজন, "যে লুকিয়ে-চুরিয়ে ছবি তুলছে, সে কি সেই যুগলের অনুমতি নিয়েছে ছবি তোলার আগে? এই লোকটার মানসিকতা ততটাই কদর্য, যতটা যারা ক্যামেরা বসিয়ে মানুষের ব্যক্তিগত মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করে, যারা পাশের বাড়িতে কী হচ্ছে দেখার জন্য জানলা খুলে দেখে! নিজস্ব ভয়ারিজমের জায়গা থেকে যে ছবিটা তুলেছে, তাকে কেন প্রশ্ন করে, ট্রোল করে, গালাগালি দিয়ে তুলোধনা করছি না আমরা? এই নোংরা মানুষটার পরিচয় বের করে সোশাল মিডিয়াতে তাকে এক্সপোজ করা উচিত যাতে সে লুকনোর কোনও পথ না পায়। তা না করে যারা নিজেদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করেছিল, তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছি আমরা। এটা আমাদের দ্বিচারিতা!"