রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: ক্লাস ঘরের দরজায় ধাক্কা মারার অভিযোগে দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রকে লাঠিপেটার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে মঙ্গলবার স্কুলে ঢুকে শিক্ষকদের ঘরে আটকে বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়ার পরিবারের সদস্যরা। মারধরের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এদিন পুরো পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনতে স্কুলে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ছাত্রের নাম রৌনক বৈরাগ্য। বাড়ি তেহট্ট থানার বেতাই করুইগাছি বকুলতলায় এলাকায়। ঘটনাটি ঘটে তেহট্ট ২ নং চক্রের কড়ুইগাছি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। রৌনক দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া। নাবালক ছাত্রকে সামান্য কারণে লাঠিপেটা করার অভিযোগে স্কুলে চার শিক্ষককে স্কুলঘরে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখায় অভিভাবকরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, স্কুলে শিশুদের যেখানে মিড ডে মিল খাওয়ানো হয়,সেখানে থাকে কুকুর। স্কুলের শৌচালয়ের অবস্থাও খারাপ। এদিন সাড়ে বারোটা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। এরপর সেখানে তেহট্ট থানার পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। খবর পেয়ে স্কুলে আসেন তেহট্ট ২ নং চক্রের কর্মীরাও।
[আরও পড়ুন: নদিয়া ও পুরুলিয়ার সোনার দোকানে জোড়া ডাকাতি, ক্রেতা সেজে লুট কোটির গয়না, লক্ষাধিক নগদ]
আহত পড়ুয়া রৌনকের মা বুলটি বৈরাগ্য জানান, সোমবার বিকেলে ছেলেকে পড়তে পাঠানোর আগে জামা পরাতে গিয়ে দেখি হাতে-পেটে কালশিটে দাগ। ছেলেকে চেপে ধরতেই সমস্ত ঘটনার কথা খুলে বলে। সে জানায়, “প্রধান শিক্ষক এসে চারজনকে হাঁটু গেড়ে বসিয়ে রাখে এবং আমাকে বাঁশের কঞ্চির তৈরি লাঠি দিয়ে মারধর করে।” ছেলেটির মা আরও জানান, কিছুদিন আগে ছেলের পেটে একটি অপারেশন হয়েছে, সেই অপারেশনের জায়গাতেও লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে, সেই দাগ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।” যন্ত্রণা হওয়ায় তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে পড়ুয়ার চিকিৎসা করানো হয়। প্রতিবাদে মঙ্গলবার স্কুল খুলতেই শিক্ষকদের আটকে প্রতিবাদ জানায় অভিভাবকরা।
প্রধান শিক্ষক সৌমেন মন্ডল পুলিশের সামনে মারধরের কথা স্বীকার করেন এবং অভিভাবক ও সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ভবিষ্যতের তিনি এ ধরনের কাজ আর করবেন না বলে সকলের সামনে কথা দেন।
[আরও পড়ুন: নিমেষে ক্যানভাসে রাধাকৃষ্ণ ফুটিয়ে তুলে বিশ্বরেকর্ড কাটোয়ার যুবকের, গর্বিত পরিবার]
তেহট্ট ২ নং চক্রের বিদ্যালয়ের পরিদর্শক গীতশ্রী মন্ডল জানান, “ঘটনাটি সোমবার ঘটলেও আমাকে স্কুল থেকে জানানো হয়নি, আজ আমি কৃষ্ণনগর ডিআই অফিসে এসেছি, এখানে বসেই ঘটনার কথা স্টাফদের কাছ থেকে জানতে পেরে সাথে সাথে অফিস থেকে স্কুলে স্টাফ পাঠানো হয়। যেটা জেনেছি এভাবে মারধর করা প্রধান শিক্ষকের ঠিক হয়নি। সেখানে সকলের সাথে আলোচনার মাধ্যমে ছাত্রটির মা বিষয়টি মিটিয়ে নিয়েছেন।”