গৌতম ব্রহ্ম: তাঁর জন্য বিচার চাইতে কয়েক হাজার ডাক্তার চেম্বারে ঝাঁপ ফেলে রাজপথে নেমেছেন। কর্মবিরতির কোপে অচল বাংলার স্বাস্থ্যব্যবস্থা। শুরু হয়েছে বিদ্রোহী ডাক্তারদের গণইস্তফার হিড়িক।
[ আরও পড়ুন: ‘নবান্ন নয়, কথা হবে এনআরএসে’, মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন ফেরাল জুনিয়র চিকিৎসকরা]
বাংলার বাইরের ডাক্তারবাবুরাও তাঁর উপর হওয়া হামলার প্রতিবাদে ওপিডি বয়কট করেছেন। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী নিজে হাসপাতালে গিয়ে শুক্রবার দেখে এসেছেন পরিবহকে। ডাক্তার বিদ্রোহের কেন্দ্রবিন্দুতে যে তিনিই। তিনি ডাঃ পরিবহ মুখোপাধ্যায়। বছর ছাব্বিশের এই জুনিয়র ডাক্তারের আঘাত এক সুরে বেঁধেছে ডাক্তারকুলকে। কিন্তু বেসুরো হয়ে গিয়েছে তাঁর জীবন। ছোট হয়ে গিয়েছে পরিবহের জগৎ।
চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন, সাঁতার কাটা, গাড়ি চালানোর মতো ‘শখ’ পরিবহের অভিধান থেকে বাদ গিয়েছে। চড়া আলোও আর সহ্য হবে না। কারণ, যেভাবে করোটির হাড় ভেঙে ব্রেনের ভিতর ঢুকে গিয়েছে তাতে যে কোনও মুহূর্তে খিঁচুনি হতে পারে পরিবহের। এটা ঠেকাতে বেশ কিছুদিন ওকে মৃগীর ওষুধ খেতে হবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই ধরনের ওষুধের বড় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। আচরণগত সমস্যা, লিভারের সমস্যা হতে পারে। কতদিন এই ওষুধগুলি পরিবহকে খেতে হবে, জানেন না তাঁর চিকিৎসকরাও।
[ আরও পড়ুন: দার্জিলিংয়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান চেয়ে রাজ্যপালের কাছে গেলেন মুকুল রায়]
কাজকর্মের দিক থেকেও অনেক বিধিনিষেধ আরোপিত হয়েছে। আইএনকে-র রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের অধিকর্তা ডাঃ সুপর্ণ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পরিবহ বাকি জীবন সাঁতার কাটা ও গাড়ি চালাতে পারবে না। করলে তা অত্যন্ত ঝুঁকিবহুল হবে। শুক্রবার সুপর্ণবাবু-সহ আইএনকে-র অনেক চিকিৎসক পরিবহের হয়ে বিচার চাইতে পথে নেমেছিলেন। সুপর্ণবাবু জানালেন, “পরিবহকে আইটিইউ থেকে এইচডিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এরপর জেনারেল বেডে দেওয়া হবে। কিন্তু সমস্যা হল দীর্ঘদিন আইটিইউতে থাকায় নিউমোনিয়া ছোবল বসিয়েছে পরিবহের ফুসফুসে। অ্যান্টিবায়োটিক চলছে। চলছে ‘চেস্ট ফিজিওথেরাপি’। সংক্রমণ সারতে দু-তিন দিন সময় লাগবে। বাড়ি ফিরতে এখনও সপ্তাহখানেক লাগবে। সুপর্ণবাবু জানালেন, পরিবহের ‘লং টার্ম রিহ্যাব’ লাগবে। হাত-পায়ে জোর ফেরাতে একটু সময় লাগবে। ‘রিকন্ডিশনিং’ করাতে হবে। পরিবহ এদিনও নিজে হাতে খাচ্ছেন। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, প্রাথমিক বিপদ কেটে গিয়েছে। কিন্তু হাওড়ার ডোমজুড়ের ষষ্ঠীতলার বাসিন্দার পৃথিবীটা যে অনেক ছোট হয়ে গিয়েছে।
The post হাড় ঢুকেছে পরিবহর করোটিতে, চিরতরে বাদ সাঁতার-ড্রাইভিং appeared first on Sangbad Pratidin.