সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্যারিস অলিম্পিকে মিক্সড ইভেন্টে ব্রোঞ্জজয়। ভারতের ঝুলিতে ঢুকেছে দ্বিতীয় পদক। প্রথম শটে পিছিয়ে পড়েও দুরন্ত কামব্যাক করেন মনু ভাকের এবং সরবজ্যোত সিংয়ের জুটি। মনু তখন মেরেছিলেন ১০.৬। সেখানে সরবজ্যোতের শট ছিল ৮.৬। তখন কি তাঁর মনে পড়ছিল দুদিন আগের কথা? সিঙ্গলস ইভেন্টে অল্পের জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি।
কিন্তু না, যাবতীয় চাপ সামলে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন করেন তিনি। অলিম্পিকের (Paris Olympics 2024) মঞ্চে প্রথমবার নেমেই মিক্সড ইভেন্টে মনুর সঙ্গে ব্রোঞ্জের সাফল্য পেলেন সরবজ্যোতও (Sarabjot Singh)। অথচ, তাঁর তো শুটার হওয়ার কথাই ছিল না। হতে চেয়েছিলেন ফুটবলার। প্র্যাকটিসও করেছিলেন তিনি। সঙ্গে আরও একটা ছবি ভাসছিল তাঁর চোখের সামনে। সামার ক্যাম্পে পিস্তল দিয়ে লক্ষ্যভেদ করছে কয়েকজন বালক। ছবিটা কিছুতেই বেরোচ্ছিল না মাথা থেকে। তাঁর বয়স তখন মাত্র ১৪। বাবাকে গিয়ে জানালেন, 'আমি শুটিং নিয়ে এগোতে চাই।'
[আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নিয়মরক্ষার ম্যাচেও লক্ষ্য জয়, পরীক্ষানিরীক্ষার কথাও ভাবছেন কোচ গম্ভীর]
সেটা ২০১৪ সাল। ফুটবল ছেড়ে আচমকা শুটিংয়ে নেমে পড়াটা সেভাবে মানতে পারেননি সরবজ্যোতের বাবা জাতিন্দর সিং। তিনি পেশায় কৃষক। হরিয়ানার আম্বালার ঢিন গ্রামে বসে তখনও তিনি স্বপ্ন দেখতে পারেননি ছেলে অলিম্পিকে পদক জিতবেন। তাছাড়া আর্থিক সমস্যা তো ছিলই। শুটিং ইভেন্টে খরচ অনেক। ছেলেকে জানিয়েও দিলেন নিজের আর্থিক সমস্যার কথা। কিন্তু হাল ছাড়েননি সরবজ্যোত। শেষ পর্যন্ত তাঁর জেদের কাছে হার মানতে হয় বাবাকে।
[আরও পড়ুন: চুরমার ১২৪ বছরের রেকর্ড, প্রথম ভারতীয় হিসাবে অলিম্পিকে অনন্য নজির মনু ভাকেরের]
পড়াশোনা করতেন চণ্ডীগড়ের ডিএভি কলেজে। সেই সঙ্গে কোচ অভিষেক রানার অধীনে শুটিং প্র্যাকটিস চালিয়ে যান। প্রথম বড়সড় সাফল্য আসে ২০১৯ সালে। জুনিয়র বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতে প্রথম নজরে আসেন তিনি। তার পর একের পর সাফল্য এসেছে ২২ বছরের ঝুলিতে। ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে বিশ্বকাপে সোনাও পেয়েছেন। অলিম্পিকে সিঙ্গলসে আশা জাগিয়ে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি। মাত্র .১ পয়েন্টের জন্য ছিটকে যান। কিন্তু সেই ব্যর্থতা ভুলে মিক্সড ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতলেন তিনি।