বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: ফৌজদারি দণ্ডবিধির নতুন তিন বিল নিয়ে আলোচনায় শাসক-বিরোধী চাপানউতোরে তপ্ত হল সংসদের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির তিন দিনের বৈঠকের প্রথম দিনই। কেন কেন্দ্র তথা বিজেপি নতুন বিল নিয়ে এসে তাড়াহুড়ো করতে চাইছে? এই প্রশ্ন তুলে বৃহস্পতিবার বৈঠকে সরব হয়েছেন ইন্ডিয়া জোটের সদস্যরা। অন্যদিকে, বিরোধীরা অহেতুক দেরি করাতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছে শাসক শিবির।
সূত্রের খবর, আলোচনা ছাড়াই তড়িঘড়ি করে সরকার বিল নিয়ে এসেছে বলে অভিযোগ করে কমিটিকে রাজ্যে রাজ্যে গিয়ে বার কাউন্সিল-সহ বিভিন্ন অংশীদারদের সঙ্গে কথা বলতে হবে বলে দাবি তুলেছেন বিরোধী সাংসদরা। পালটা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) ২০১৯ সালেই সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজ্যপাল, সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) প্রধান বিচারপতি, দেশের সমস্ত রাজ্যের হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি, বার কাউন্সিলের কাছে চিঠি লিখেছিলেন। এমনকি সংসদের দুই কক্ষের সমস্ত সাংসদের কাছে এ বিষয়ে মতামত জানতে চেয়েছিলেন এবং তাঁদের কাছে ৩,২০০ মতামত আসার পরেই বিল আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: হাতে চাঁদ পেল ভারত, ১৪০ কোটির স্বপ্ন নিয়ে চন্দ্রপৃষ্ঠে ইসরোর ‘বিক্রম’]
এদিন ভাল্লা তাঁর দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য বিল নিয়ে বিশদ ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য উপস্থিত ছিলেন। এদিনের বৈঠকে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিয়েছিলেন ইন্ডিয়া (INDIA) জোটের সদস্যরা। সূত্রের খবর, জোটের সদস্য ডিএমকের দয়ানিধি মারান আধিকারিকদের সামনে বলবেন নাকি বলবেন না তা নিয়ে টালবাহানা করায় প্রায় কুড়ি মিনিটের জন্য বৈঠক কক্ষ থেকে বেরিয়ে সদলবলে অপেক্ষা করতে হয় ভাল্লাকে। মারান মূলত বিলে হিন্দি আগ্রাসনের অভিযোগ তুলে ধরে সরব হয়েছেন। তাঁকে সমর্থন করেছেন ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা। জোটের আরেক সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়ান কেন সরকার নতুন বিল নিয়ে এসেছে, পুরোনো বিলে সংশোধনী কেন করছে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁকে কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিং থেকে জোটের বাকি সাংসদরাও সমর্থন করেছেন।
[আরও পড়ুন: ‘স্বপ্নের ভারত গড়তে প্রতিটা ভোট দামী’, নির্বাচন কমিশনের ‘জাতীয় আইকন’ হয়েই বললেন শচীন]
১১-১২ সেপ্টেম্বর কমিটির পরের বৈঠকে ভাল্লাকে হাজির থেকে ইন্ডিয়া জোটের সাংসদদের বক্তব্য শুনতে হবে এবং সে সময়ই এই প্রশ্নের জবাবও তাঁকে দিতে হবে বলেও দাবি করেছেন ডেরেকরা (Derek O’Brien)। সূত্রের খবর, বৈঠক চলাকালীন রাজনৈতিক অভিযোগও উঠেছে। ভাল্লা যখন বৈবাহিক ধর্ষণ, শিশু ধর্ষণের মতো বিষয়ের ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন সেই সময় কমিটির সদস্য, বাংলার বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ বাংলায় খুন, ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধে অভিযোগ দায়ের করা হয় না বলে অভিযোগ তুলেছেন। আবার এদিনের বৈঠকের শুরুতে জেল সংশোধনের উপর রিপোর্ট গৃহীত হওয়ার কথা থাকলেও তাতে কমিটির সদস্যদের সুপারিশের উল্লেখ নেই বলে আপত্তি তোলেন ইন্ডিয়া জোটের সদস্যরা। তাঁদের সমর্থনে বিজেপির দুই সাংসদ এগিয়ে এসেছেন বলেই শোনা গিয়েছে।