নন্দন দত্ত, সিউড়ি: পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ তৃণমূল ব্লক সভাপতির ইস্তফা। পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে জেলা নেতৃত্বকে চিঠি নলহাটি ২ নম্বর ব্লক সভাপতি বিভাস অধিকারীর। তাঁর চিঠি নিয়ে চলছে জোর জল্পনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীর সঙ্গে ছবি পোস্টও করেছেন তিনি। তবে কি দল থেকে ইস্তফা নাকি দলবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিভাস, চলছে জোর জল্পনা।
ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে চলছে জোর চর্চা। বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহার দাবি, “কালীপুজোর পর এমন অনেকেই দল ছেড়ে বেরিয়ে আসবেন। তবে চাকরি চোরদের দলে কোনমতেই নেওয়া যাবে না।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ জানান, “যখন জেল ভরো আরম্ভ হয়েছে, তখন অনেক নেতা দল ছেড়ে পালাতে চাইছে। দল তাদের নিয়ে কী করবে তা জানিনা। যারা টাকা দিয়ে শিক্ষকতার মতো পেশাকে কলুষিত করেছে আমরা তাদের ছাড়ব না।”
যদিও ইস্তফার নেপথ্যে দলবদলের সম্ভাবনা দেখছে না তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের জেলা মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিভাসবাবু শারিরীকভাবে অসুস্থ। জেলা সভাপতিকে উনি কোনও চিঠি দেননি। মাঝে মাঝে উনি এরকম কথা বলেন।” এদিকে পদত্যাগের চিঠি প্রকাশ্যে আসতেই বৃহস্পতিবার বিকেলে নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের কৃষ্ণপুর গ্রামে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন ব্লকের তৃণমূল পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য। তবে তিনি এবিষয়ে মুখ খোলেননি।
[আরও পড়ুন: ‘ওদের শাস্তি দেবে জনতা’, গান্ধীজিকে মহিষাসুর সাজানোয় পুজো উদ্যোক্তাদের আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর]
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত মানিক ভট্টাচার্য ও রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল ব্লক তৃণমূল সভাপতি বিভাস অধিকারীর। আবার ব্লক সভাপতি থাকাকালীন বিজেপির রাজ্যের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীকে নিজের এলাকায় নিয়েও আসেন তিনি। এমনকি তলে তলে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলতেন বলে অভিযোগ। দলের একাংশের দাবি, বিভাস অধিকারীকে নিয়ে হাজার বিতর্ক ছিল। তবে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকায় কেউই কিছু বলতেন না। যদিও তার ক্ষমতা খর্ব করতে তাঁর অধীনে ৩ জন কার্যকরী সভাপতি নিয়োগ করে তৃণমূল।এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক গড়মিলের অভিযোগের জবাব দিতে গত মাসে প্রকাশ্যে জনসভায় বিভাসবাবু তার সম্পত্তির হিসাবও দাখিল করেন। এরই মাঝে আচমকা বুধবার দলের পর্যবেক্ষকের উদ্দেশ্যে শারিরীক অসুস্থতার কথা জানিয়ে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠান।
বিভাস অধিকারী জানান, দুর্ঘটনার পর তিনি অসুস্থ। তার দু’হাত সোজা হয় না। তাই পদ থেকে অব্যাহত দিতে চান। বিধানসভা ভোটে তাঁর এলাকায় ফলাফল খারাপ হওয়া নিয়ে দলীয় নেতৃত্বকে দায়ী করেন বিভাস। বলেন, “ভোট এভাবে হয় না। একটা ব্লকের, একটা রাজ্যের একটা লোকের উপর নির্ভর করে হয় না।লোকসভায় মোদি হাওয়া সত্ত্বেও সাংসদ শতাব্দী রায়কে নিয়ে এলাকায় বৈঠক করেছি। ফল ভাল হয়েছিল। এখন শারিরীকভাবে অসুস্থ। এই অবস্থায় প্রতিটি গ্রামে গিয়ে ভোট করতে পারব না। এই পরিস্থিতিতে দলের কর্মীদের যদি আমার উপর সহানুভূতি না থাকে তাহলে আমি সে দলে মূত্র বিসর্জন করি।”