অর্ণব আইচ: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেপ্তারির পরই মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন। তৃণমূলের সমস্ত দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাঁকে। গত কয়েকমাস যাবত তাঁর ঠিকানা প্রেসিডেন্সি জেল। দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়লেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে আশাবাদী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সোমবার আলিপুর আদালতে ঢোকার সময় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর গলায় শোনা গেল আত্মবিশ্বাসের সুর।
সোমবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) আলিপুর আদালতে নিয়ে আসা হয়। ঢোকার সময় একটি কথাও বলেননি তিনি। তবে কোর্ট লকআপ থেকে চার নম্বর কোর্ট রুমে পেশ করার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গলায় শোনা যাবে আত্মবিশ্বাসের সুর। তিনি বলেন, “তৃণমূল জিতবে।”
[আরও পড়ুন: রয়্যাল বেঙ্গলের ডেরায় বাড়ছে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী, সুন্দরবনে খোঁজ মিলল ৩৮৫টি বাঘরোলের]
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তদন্তে নেমে গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করা হয়। ইডি’র জালে ধরা পড়েন পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। তাঁর দু’টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট থেকে নগদ অন্তত ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়। তাছাড়া প্রচুর পরিমাণ সোনার গয়নাগাটি, বিদেশি মুদ্রার খোঁজও মেলে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো দুঁদে রাজনীতিকের গ্রেপ্তারিতে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূল। গ্রেপ্তারির পর ধীরে ধীরে মন্ত্রিত্ব হারান পার্থ। তৃণমূলের দলীয় পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয় তাঁকে। গরু পাচার মামলা ধৃত অনুব্রত মণ্ডলের পাশে তৃণমূলের দলীয় নেতৃত্ব এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে। তবে পার্থর সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। এই পরিস্থিতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গলায় এর আগেও দলের পাশে থাকার বার্তা শোনা গিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ব্যাপারেও স্বাভাবিকভাবেই তিনি যথেষ্ট আশাবাদী।
এদিকে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, এসপি সিনহা, অশোক সাহা-সহ সাতজনের জেল হেফাজত শেষ হয়। তাঁদের আলিপুর আদালতে পেশ করা হয়েছে। চলছে জোর সওয়াল জবাব। শারীরিক অসুস্থতাকে হাতিয়ার করে জামিনের আরজি জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী। তবে তথ্যপ্রমাণ সাজিয়ে পালটা জামিনের বিরোধিতায় সরব সিবিআইয়ের আইনজীবী। শেষ পর্যন্ত জামিন মিলবে নাকি জেল হেফাজতেই থাকতে হবে নিয়োগ দুর্নীতি ধৃত সাতজনকে, সেটাই এখন দেখার।