সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথম কিছুদিন সম্পূর্ণ চুপ। তারপর স্রেফ সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরা দেখলেই মুখ খুলছেন। তদন্তকারীদের প্রশ্নের উত্তরে আবার মুখে কুলুপ। ইডির (ED) জেরায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এহেন কৌশল নিয়ে কার্যত বিরক্ত তদন্তকারীরা। এসএসসি দুর্নীতি মামলায় সদ্যপ্রাক্তন মন্ত্রীর আচার-আচরণ দেখে রাজনৈতিক মহলের মত, সংবাদমাধ্যমকে সামনে রেখে নিজের ভাবমূর্তি ভাল করার চেষ্টা করছেন তিনি। আর সেই কারণেই তদন্তে সহযোগিতা করছেন না পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)।
এই মুহূর্তে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় রয়েছেন ইডি হেফাজতে। ৪৮ ঘণ্টা পরপর জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা হচ্ছে। আর সংবাদমাধ্যমও এই সময়টুকুতে সতর্ক থাকে অভিযুক্তদের বক্তব্য শোনার জন্য। প্রথমদিকে মিডিয়ার সামনে তিনি বিশেষ কিছুই বলেননি। পরে ধীরে ধীরে মুখ খোলেন। শুক্রবার তিনি বলেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র (Conspiracy) হচ্ছে। কারা ষড়যন্ত্র করছে, তা সময়ই বলবে। এরপর রবিবার আবার তিনি বিস্ফোরক দাবি করেন। বলেন, “আমার কোনও টাকা নেই। আমার টাকা নয়। সময় এলে সব জানা যাবে।” হাসপাতাল থেকে বেরনোর সময়েও নিজের দাবিতে অনড় রইলেন তিনি। পার্থর দাবি, “টাকা আমার নয়, আমার নয়, আমার নয়। কোনওদিন টাকা লেনদেন আমি করি না।”
[আরও পড়ুন: রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদল আসন্ন, বাদ পড়ছেন কারা? নতুন মুখ কে? রইল সম্ভাব্য নাম]
সূত্রের খবর, এরপর ইডি আধিকারিকরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছেন, কোন ষড়যন্ত্রের কথা বলছেন তিনি। কিন্তু সেই প্রশ্নের উত্তরে মুখে কুলুপ এঁটেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী। টাকা যদি পার্থবাবুর না হয়, তাহলে এত টাকার মালিক কে? কোনও প্রশ্নেরই তিনি কোনও জবাব দেননি বলে তদন্তকারী সূত্রে খবর।প্রথম থেকেই জিজ্ঞাসাবাদে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহযোগিতা করছেন না বলে শোনা যাচ্ছিল কেন্দ্রীয় সংস্থার অন্দরে। তিনি কোনও প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন না। বেশি প্রশ্ন করলে বারবার বলছিলেন, তাঁর ঘুম পাচ্ছে, বিশ্রাম দেওয়া হোক। এরপরও অবশ্য তদন্তকারীরা এসএসসি দুর্নীতির (SSC Scam) মতো বড়সড় মামলার জট খুলতে একাধিকবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। প্রশ্ন রয়েছে হাজারও, কিন্তু উত্তর নেই। অন্তত ইডির অন্দরে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মুখে।
[আরও পড়ুন: জ্ঞানবাপী মামলায় মুসলিম পক্ষের উকিল প্রয়াত, শোকপ্রকাশ মসজিদ কমিটির]
যিনি তদন্তকারীদের সামনে মৌন, ইডি দপ্তরের চার দেওয়ালের বাইরে মুখর তিনিই। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরা দেখলেই তিনি বলে উঠছেন, ‘ষড়যন্ত্র’, ‘টাকা আমার নয়’ – এমনই নানা দাবি। অথচ ষড়যন্ত্রকারী কারা, টাকাই বা কার – সেসব উত্তর দিচ্ছেন না। তাঁর এহেন আচরণে দুঁদে গোয়েন্দারাই খানিকটা ধন্দে পড়েছেন। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব খাঁড়া করে নিজে দায়মুক্ত হতে চাইছেন। তবে কৌশলী চালে ইডির জেরা থেকে রেহাই পাওয়া বোধহয় খুব একটা সহজ হবে না।