সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) তাঁর বাড়িকে ‘মিনি ব্যাংক’ হিসাবে কাজে লাগাতেন। ওই টাকায় নাকি কোনওদিন হাতও দিয়ে দেখেননি তিনি। সূত্রের খবর, ইডি হেফাজতে এমনই বিস্ফোরক দাবি করেছেন মন্ত্রী ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। এই দাবির কোনও সারবত্ত্বা রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন ইডি আধিকারিকরা।
গত শুক্রবার অর্পিতার টালিগঞ্জের অভিজাত আবাসনে হানা দেন ইডি (ED) আধিকারিকরা। সেখানে একটি বন্ধ ঘর নজরে আসে তাঁদের। ওই বন্ধ ঘরে ঢুকে কার্যত বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। কারণ, ঘরে কার্যত পা ফেলার জায়গা ছিল না। চতুর্দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল দু’হাজার এবং পাঁচশো টাকার নোটের বান্ডিল। বন্ধ ওয়ার্ড্রোবের দরজা খুলেও টাকার পাহাড় দেখতে পান তাঁরা। ম্যারাথন জেরার পর গ্রেপ্তার করা হয় অর্পিতাকে। আপাতত ইডি হেফাজতেই রয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে ৩৮ তৃণমূল বিধায়ক’, বিস্ফোরক দাবি মিঠুনের]
বাংলা এবং ওড়িয়া ছবিতে অভিনয়, মডেলিং এবং নেল পার্লার ছাড়া অর্পিতার (Arpita Mukherjee) অর্থ উপার্জনের অন্য কোনও পথ ছিল না। তাই বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া ২১ কোটি টাকার উৎস কী, তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন যে ওঠার কথাই ছিল সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ইডি আধিকারিকরা তাই সিজিও কমপ্লেক্সে একাধিকবার জেরা করছেন অর্পিতাকে। প্রধান প্রশ্ন একটাই, বিপুল টাকার উৎস কী? ইডি সূত্রে খবর, অর্পিতা দাবি করেছেন তাঁর বাড়িকে ‘মিনি ব্যাংক’ হিসাবে কাজে লাগাতেন পার্থ। সপ্তাহে একদিন আবার কখনও কখনও দশদিন অন্তর একবার ওই ঘরে টাকা রাখতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কখনও কখনও মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সঙ্গীসাথীও ওই ফ্ল্যাটে এসে টাকা রাখতেন বলেই দাবি অর্পিতার। কত টাকা ওই ঘরে রয়েছে, তা তিনি জানতেন না বলেও দাবি। নিজের এক বান্ধবীর কথাও ইডির কাছে মন্ত্রী ‘ঘনিষ্ঠ’ বলেছেন বলেই তদন্তকারীদে সূত্রে জানা গিয়েছে।
ইডি সূত্রে খবর, একজন টলিউড অভিনেতার মাধ্যমে অর্পিতা এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আলাপ হয়। গত ২০১৬ সালে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় তাঁদের। শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতি (SSC Scam) সংক্রান্ত টাকাই যে ওই ফ্ল্যাটবন্দি হয়েছিল, সে ইঙ্গিত অর্পিতা দিয়েছেন বলেই ইডি সূত্রে খবর। তবে নিজের ফ্ল্যাটকে কেন ‘মিনি ব্যাংক’ হিসাবে ব্যবহার করতে দিলেন অর্পিতা, সে প্রশ্ন উঠছেই। আপাতত ৩ আগস্ট পর্যন্ত ইডি হেফাজতেই থাকতে হবে অর্পিতা এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁদের জেরা করে সমস্ত প্রশ্নের কিনারা হবে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।