গোবিন্দ রায়: নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের কাকা বলে দাবি করেছিলেন পার্থর আইনজীবী। শুধু তাই নয়, পার্থ নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত নন এবং তাঁর কাছ থেকে এই সংক্রান্ত তথ্য ও নথি পাওয়া যায়নি বলেও দাবি ছিল। বৃহস্পতিবার তাঁর জামিন মামলায় সেই দাবিই নস্যাৎ করে দুর্নীতির সাপেক্ষে একাধিক তত্ত্বের হদিশ দিল ইডি। উঠে এল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সন্তান দত্তক প্রসঙ্গ। ইডির দাবি, অর্পিতাকে সন্তান দত্তক নেওয়ায় ছাড়পত্র দিয়েছিলেন পার্থ।
এদিন আদালতে ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি জানান, “শিশু দত্তক নেওয়ার জন্য অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে ছাড়পত্র দিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন যে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের কিছু হলে শিশুটির দায়িত্ব তিনি নেবেন। সেটা ছেলেই হোক আর মেয়েই হোক।” পাশাপাশি, অর্পিতা-সহ একাধিক ব্যক্তিকে দুর্নীতি সংগঠিত করতে ব্যবহার করেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, দাবি ইডির। তাঁর দাবি, “ঘনিষ্ঠ পারিবারিক বন্ধু থেকে কাকুতে পরিণত হয়েছিলেন পার্থ। তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় কাজ করত। গোয়া এবং থাইল্যান্ডে অর্পিতার সঙ্গে স্নেহময় দত্তকে পাঠিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই।”
[আরও পড়ুন: সাদা জুতো পায়ে, শাহজাহান যায়! আদালতে রাজকীয় মেজাজে প্রবেশ সন্দেশখালির ‘বাদশা’র]
আদালতে এই সংক্রান্ত নথি পেশ করে এডুলজির আরও দাবি, “এই দুজনের মধ্যে কী সম্পর্ক ছিল আমি জানি না, কিন্তু স্নেহময় দত্তর বক্তব্য পুরোটাই আদালতের সামনে রাখলাম। এখান থেকেই তাদের মধ্যে কী সম্পর্ক ছিল সেটা স্পষ্ট হয়।” অর্পিতার বক্তব্য-সহ এই মামলার সাক্ষীর বক্তব্য পেশ করে আইনজীবীর অভিযোগ, “পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই দুর্নীতির কিংপিন। অর্পিতা মুখোপাধ্যায় প্রকৃতপক্ষে এই দুর্নীতির রানি।” এদিন ইডির অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানতে চান, “এই মামলায় কতজন সাক্ষী আছে?” ইডি জানায়, ১৬৫ জন। এর প্রেক্ষিতে বিচারপতির মন্তব্য, “তাহলে অদূর ভবিষ্যতে নিম্ন আদালতে বিচারপর্ব শেষ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।” কিন্তু ইডির আইনজীবী স্পষ্ট করেন, বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করতে ইডি প্রস্তুত। হাই কোর্ট নির্দেশ দিলেই প্রত্যেকদিন নিম্ন আদালতে শুনানি করতে প্রস্তুত।