মণিশংকর চৌধুরী: ছাত্র সমাজের ডাকে নবান্ন অভিযানের আড়ালে নাশকতার ছক? লাশ ফেলার চক্রান্ত? এমনই আশঙ্কা পুলিশের। একই আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও। এমনকী, অডিও শুনিয়েছে তারা। জোড়াফুল শিবিরের দাবি, হায়াতে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করছেন আন্দোলনকারীরা। এমনই সব অভিযোগের পাহাড় নিয়ে সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করতে বসেছিলেন পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিরা। সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত চোখা চোখা প্রশ্নের মাঝে খানিক ম্রিয়মাণ হয়ে পড়েন সায়ন লাহিড়ী, শুভঙ্কর হালদাররা। উত্তর দিতে গিয়ে কিছুটা আমতা আমতাও করেন। পরিশেষে তাঁদের দাবি, এটা অরাজনৈতিক কর্মসূচি। রাজনীতিকে টানবেন না।
আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার ২৭ আগস্ট নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে ছাত্র সমাজ। কিন্তু এই আন্দোলনের আড়ালে হিংসার ছক কষা হচ্ছে বলে দাবি করেছে তৃণমূল। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের তরফে দুটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। ভিডিওগুলিতে একাধিক ব্যক্তির মুখ থেকে ‘বডি চাই’ শব্দবন্ধ শোনা গিয়েছে। যদিও এই ভিডিও দুটির সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল। ‘বডি চাই’ শব্দবন্ধের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কুণাল ঘোষ বলেন, “মঙ্গলবারের মিছিল নিয়ে একটা চক্রান্ত চলছে। আমরা তৃণমূলের সবাই, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেকে আর জি করের ঘটনার বিচার চাই। আপনারা যদি বলেন, জাস্টিস ফর আর জি কর। আমরা বলব তোমার আমার এক স্বর। কিন্তু যদি বলেন রিজাইন মমতা। তবে আমরা বলব, ময়দানে বুঝে নেবে বাংলার জনতা। কিন্তু মঙ্গলবারের ওই মিছিল বেআইনি এবং অবৈধ। ওই মিছিলের জন্য পুলিশের অনুমতি নেওয়া হয়নি।” অশান্তির আশঙ্কার কথা শোনা গিয়েছে পুলিশের গলাতেও। সেই কথা মাথায় রেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে তারা। এমনকী, মিছিলের অনুমতি দেয়নি তারা। উপরন্তু রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তাদের যোগের বিষয়টিও সামনে এনেছে। পুলিশ কর্তার দাবি, রবিবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ হায়াত রিজেন্সিতে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ছাত্র সমাজের আহ্বায়করা। গোপন বৈঠকও হয়েছে। সেই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে? মিছিল থেকে অশান্তি ছড়ানোর নীলনক্সা আঁকা হয়েছে সেখানে? কার সঙ্গে বৈঠক করেছেন তাঁরা?
[আরও পড়ুন: ‘প্রত্যেকেই আমাকে অশ্লীলভাবে ছুঁয়েছে!’ ৪ নায়কের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন অভিনেত্রী]
সাংবাদিক সম্মেলনে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কিছুটা ঢোক গেলে ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিরা। আমতা আমতা করে তাঁদের জবাব, "এটা বাংলার ছাত্র সমাজের আন্দোলন। এর সঙ্গে কেউ রাজনীতিকে জুড়বেন না। রাজনৈতিক নেতাদের এর থেকে দূরে থাকতে বলব। কোনও দলের পতাকা নিয়ে মিছিলে জুড়বেন না।" কোনও প্রশ্নেরই স্পষ্ট উত্তর তারা দেয়নি। ফলে দিনের শেষে সন্দেহটা থেকেই যাচ্ছে। রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই কি শুভেন্দু অধিকারীদের অঙ্গুলিহেলনে এই মিছিল? যার আসল লক্ষ্য অশান্তি ছড়ানো? প্রশ্ন বহু, কিন্তু উত্তর কে দেবে?