অভিরূপ দাস: আইজল থেকে হায়দরাবাদ, ভায়া কলকাতা। প্লেন তিলোত্তমার মাটি ছোঁয়ার আগেই বুকের বাঁদিকে অসহ্য যন্ত্রণা। পাশের যাত্রী তখনও আন্দাজ করতে পারেননি কী হয়েছে। আচমকা বিমানের মধ্যেই বুক চেপে বসে পড়েন মহম্মদ মাজহার আহমেদ। বৃহস্পতিবারের ঘটনা। বছর পঞ্চান্নর মাজহার আহমেদকে সাহায্য করতে ছুটে আসেন এয়ার হোস্টেসরা। কলকাতা বিমানবন্দরে মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের কিয়স্কে খবর দেওয়া হয়। চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন গতিক ভালো নয়। রক্তচাপ অস্বাভাবিক। পালস রেট অত্যন্ত দ্রুত। দ্রুত তাঁকে পিসিআর দেওয়া হয়। ইসিজি করতে গিয়ে দেখা যায় হৃদযন্ত্র ঠিকমতো কাজ করছে না। তড়িঘড়ি তাকে সরবিট্রেট দেওয়া হয়। কিন্তু ক্রমশ নেতিয়ে পরছিল রোগী। এয়ারপোর্ট থেকেই অ্যাম্বুল্যান্স করে চার্ণক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আপাতত সেখানেই ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি মহম্মদ মাজহার আহমেদ। বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, আইজল থেকে একাই ভ্রমণ করছিলেন ওই ব্যক্তি। মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশনে আক্রান্ত তিনি। কী এই মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশন? হার্টের কাজ করার জন্য প্রয়োজন হয় পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন ও পুষ্টির। এই অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহের জন্য হার্টের নিজস্ব রক্তনালী রয়েছে। হৃৎপিণ্ডে পুষ্টির যোগান দেয় করোনারি আর্টারি নামে হৃৎপিণ্ডের গায়ে লেগে থাকা দুটি ছোট ধমনী বা রক্তনালী। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মহম্মদের একটি রক্তনালী সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার ফলেই হৃৎপিণ্ডে পুষ্টির যোগান বন্ধ হয়ে যায়। চিকিৎসা পরিভাষায় একেই বলে মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ভাগ্য ভালো বিমান সে সময় কলকাতা বিমানবন্দরের কাছেই ছিল। আরও দেরি হলে পেশেন্টের জীবন নিয়ে টানাটানি পড়ে যেত। বন্ধ হয়ে যাওয়া আর্টারি খুলতে পিটিসিএ করতে হবে ওই ব্যক্তির। পিটিসিএ একধরনের অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি। ভীনরাজ্য থেকে খবর দেওয়া হয়েছে মাজহারের পরিবারের লোকেদের। উল্লেখ্য হার্ট অ্যাটাক হলে তিনঘণ্টার মধ্যে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াই উচিৎ। এই সময়কে বলা হয় গোল্ডেন আওয়ার। এই সময় পেড়িয়ে গেলে রোগীকে বাঁচানো মুশকিল হয়ে পড়ে।
[আরও পড়ুন: দক্ষিণ কলকাতার সভাপতিকে সরানোর দাবি, বিজেপির রাজ্য দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ কর্মীদের]
The post মাঝ আকাশে বিমানে হার্ট অ্যাটাক মহম্মদের! ভরতি সিসিইউতে appeared first on Sangbad Pratidin.