রাজা দাস, বালুরঘাট: হাসপাতাল থেকে উধাও চিকিৎসাধীন এক রোগী। টানা আটদিনেও খোঁজ মেলেনি আদিবাসী সম্প্রদায়ভূক্ত ওই ব্যক্তির। রবিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরব নিঁখোজ রোগীর পরিবারের লোকজন। এদিন বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি বিল্ডিংয়ে ঢুকে চরম বিক্ষোভ করে ভাঙচুর চালান রোগীর পরিজনেরা। চেয়ার, টেবিল-সহ বহু আসবাবপত্র ভেঙে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে বালুরঘাট থানার আইসির নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
গত ৫ জুলাই, শুক্রবার বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি বিল্ডিংয়ে ভর্তি হয়েছিলেন সুনীল ওঁরাও নামে এক বৃদ্ধ। বালুরঘাট থানার এক মাইল এলাকার বাসিন্দা আদিবাসী ওই বৃদ্ধর জ্বর-সহ অনান্য উপসর্গ ছিল। পরদিন শনিবার বাড়ির লোকজন দেখেশুনে আসেন তাঁকে। রবিবার সকালে হাসপাতালে খাবার নিয়ে যান পরিজনেরা। সেদিন থেকেই সুনীলের কোনও খোঁজ পাননি পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর কাছেও ওই ব্যক্তির খোঁজ ছিল না। ওইদিনই বালুরঘাট থানায় নিঁখোজ ডায়েরি করেন পরিবারের লোকজন। কিন্ত এখনও পর্যন্ত ওই ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া যায়নি।
[আরও পড়ুন: মেনুতে মাছ-মাংস নেই কেন? নিরামিষ ভোজ ঘিরে রণক্ষেত্র উত্তরপ্রদেশের বিয়েবাড়ি, আহত ৬]
নিঁখোজর স্ত্রী বিসন ওঁরাও বলেন, "হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জানতে পারি শনিবার রাত দুটো নাগাদ হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান সুনীল। হাতে স্যালাইনের চ্যানেল ছিল। তা সত্ত্বেও নিরাপত্তারক্ষী রোগীকে আটকাননি। এমনকি হাসপাতালের নার্সরাও মিথ্যা কথা বলছেন তাঁরা নাকি সকালে ওষুধ দিয়েছেন। রাত-দিন সবসময়ের জন্য আয়া রাখা হয়েছিল। কিন্ত কেউ নিজের দায়িত্ব পালন করেননি। আটদিনেও স্বামীকে উদ্ধার করা যায়নি।"
এদিকে, ঘটনার আটদিন হয়ে গিয়েছে। ধৈর্যর বাঁধ ভেঙেছে পরিবারের। অবশেষে রবিবার দুপুরে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি বিল্ডিংয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে যায় আদিবাসী মহিলাদের একটি দল। সেখানে চরম বিক্ষোভের সঙ্গে চলে ব্যাপক ভাঙচুর। খবর পেয়েই বালুরঘাট থানার আইসি শান্তিনাথ পাঁজার নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী হাসপাতালে পৌঁছয়। পুলিশকে ঘিরেও চলে বিক্ষোভ। নিঁখোজকে উদ্ধারের ব্যাপারে পুলিশি আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। আইসি শান্তিনাথ পাঁজা জানান, নিঁখোজের খোঁজে তল্লাশি চলছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে এলাকার সিসিটিভি।