মণিশংকর চৌধুরি: ‘চাল ঠিকমতো সেদ্ধ হয়নি। ডালটাও মোটের উপর তেমন ঘন নয়। তরকারি একটা আছে বটে, তবে মশলা কম। মাছের সাইজটাও তেমন মনে ধরছে না।’ না কোনও হোটেলের নয়, হাসপাতালের মেনু নিয়ে এমনটা অভিযোগ করছেন অসমের এক সরকারি হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে থাকা বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। তবে অভিযোগ পর্যন্ত ঠিক ছিল, কিন্তু সুস্বাদু খাবারের দাবিতে এবার হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে করোনা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ফেললেন তাঁরা। ফলে পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমতো গলদঘর্ম হয়ে উঠতে হয় চিকিৎসকদের।
[আরও পড়ুন: বেসরকারি ল্যাবে বাড়তে পারে করোনা পরীক্ষার খরচ! আইসিএমআরের চিঠিতে বিতর্ক]
শুনতে অবাক লাগলেও ঘটনাটি ঘটেছে অসমের গোলঘাট জেলার শহিদ কুশল কোঁওর অসামরিক হাসপাতালে। সরকারি হাসপাতালটিতে এই মুহূর্তে ভিনরাজ্য থেকে আসা বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিককে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার রাতে, খবর দেওয়া হলে অনেকেই অভিযোগ জানান যে চাল ঠিকমতো সেদ্ধ হয়নি। ডালও জলের মতো। তরকারির মান নিয়ে মুখ খোলেন তাঁরা। শেষমেশ পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গিয়ে করোনা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি পর্যন্ত দিয়ে ফেলেন তাঁরা। শেষে ফের খাবার রান্না করে অনেক কষ্টে তাঁদের বুঝিয়ে নিজের ঘরে পাঠান চিকিৎসকরা। হাসপাতালের সুপার জানিয়েছেন, রাতে ভাত কিছু কম পড়ায় তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে চাল একটু কম সেদ্ধ হয়। তবে আধঘন্টার মধ্যে ফের নতুন করে খাবার পরিবেশন করা হয়। কিন্তু ওই শ্রমিকরা বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি গালাগাল দেওয়া শুরু করে। বাধ্য হয়ে স্থানীয় পুলিশে খবর দেন তাঁরা। পড়ে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
উল্লেখ্য, এই কুশল কোঁওর অসামরিক হাসপাতালেই গত এপ্রিল মাসে চিকিৎসকদের গায়ে থুতু ছিটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে একাংশ করোনা আক্রান্তের বিরুদ্ধে। বর্তমানে অসমের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির মধ্যে অন্যতম গোলঘাট। এপর্যন্ত সেখানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২৯ জন। অসময়েও হু হু করে বাড়ছে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। এখনও পর্যন্ত গোটা রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৬৮৬ জন মানুষ। মৃত্যু হয়েছে চারজনের। পরিস্থিতি সামাল দিতে কটন কলেজ ও গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়কে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পরিবর্তিত করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: নবান্নের আপত্তি উড়িয়ে আজ রাতেই মহারাষ্ট্র থেকে রাজ্যে আসছে ৮টি ট্রেন]
The post চাল সেদ্ধ হয়নি, করোনা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি হাসপাতালে থাকা শ্রমিকদের appeared first on Sangbad Pratidin.