স্টাফ রিপোর্টার: বিরোধী শাসিত রাজ্যে বিধানসভা থেকে পাঠানো বিল রাজভবনে আটকে থাকা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। যাকে স্বাগত জানিয়ে রাজ্য বিধানসভায় সাড়ে ১২ বছরে পাশ হওয়া ২২টি বিল রাজ্যপাল আটকে রাখা নিয়ে মঙ্গবার তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banerjee)। বুধবার তার পালটা এল রাজভবন থেকে।
জোড়া আক্রমণের মুখে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নড়ে বসলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। বুধবার রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি করতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানাল রাজভবন। জানানো হয়েছে, এজন্য বিধানসভা থেকে পাঠানো বিলগুলি নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে ‘সিম্প্লিফায়েড প্রোগ্রাম অফ আর্লি অ্যান্ড এফেক্টিভ ডিসপোজাল’ (স্পিড) চালুর সিদ্ধান্ত নিলেন রাজ্যপাল। এই কর্মসূচিতে কোনও বিল রাজভবনে এলেই সেটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বা সচিবের সঙ্গে আলোচনা করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
[আরও পড়ুন: মন্ত্রীপদে রইলেন বালুই, সাংগঠনিক দায়িত্ব অন্য মন্ত্রীদের দিলেন মমতা]
মঙ্গলবার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “২০১১ সাল থেকে ২০২৩ সালের এখনও পর্যন্ত আমাদের ২২টি বিল রাজভবনে আটকে রয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘যদি বিলে কোনও ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকেই থাকে, সে ক্ষেত্রে রাজ্যের অ্যাডভোকট জেনারেলের পরামর্শ তিনি নিতে পারেন। রাজ্যপালের এ দিকে একটু নজর দেওয়া উচিত।’’ অধ্যক্ষের কটাক্ষ, ‘‘রাজভবনে তিনি খেলা দেখার বন্দোবস্ত করেছেন সাধারণ মানুষের জন্য। রাজভবনের দরজা খুলে দিয়েছেন। এমনকি জনসাধারণের অভিযোগ জানানোর বন্দোবস্ত করেছেন। কিন্তু জনগণের আওয়াজ যেখানে প্রতিফলিত হয় বিধানসভায়, জনগণের সেই আওয়াজ যেন রাজভবনের কানে যায়।” রাজ্যভবন সচিবালয়ের একটি সূত্রের দাবি, একদিকে রাজ্য বিধানসভা অধ্যক্ষের এহেন ক্ষোভ ও অন্যদিকে দিল্লিতে সুপ্রিম কোর্টের এবিষয়ে অসন্তোষ, যুগবৎ এই আক্রমণের মুখে পড়েই রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে বিল পাশ নিয়ে নড়ে বসতে হল।
[আরও পড়ুন: টাকার বদলে প্রশ্ন ইস্যুতে আরও চাপে মহুয়া, এবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ লোকপালের!]
রাজভবনে যে বিল গুলি আটকে রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে আটকে থাকা বিলগুলির মধ্যে রয়েছে, গণপিটুনি সংক্রান্ত বিল, হাওড়া ও বালি পুরসভাকে একত্রিত করা সংক্রান্ত বিল, মুখ্যমন্ত্রীকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করা সংক্রান্ত আটটি বিল। এছাড়াও আটকে রয়েছে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত সার্চ কমিটি নিয়ে বিল। এদিন লিখিত প্রেস বিবৃতিতে আটকে থাকা বিলগুলির তালিকা দিয়ে সেগুলি আটকে থাকার ব্যাখ্যা দিয়েছে রাজভবন। বলা হয়েছে, ২২টির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত সাতটি বিল আদালতের বিচারাধীন। দুটি বিল রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। একটি বিল বেশ কিছু শর্ত-সহ রাষ্ট্রপতি সম্মতি দিয়েছেন। বাকি ১২টি বিলের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কাছে কিছু ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।