কৃষ্ণকুমার দাস, বিরুলিয়া: প্রথমে মনোনয়ন পেশ, তারপর মন্দির দর্শন। আর এই দ্বিতীয় পর্ব চলাকালীনই বুধবার মুখ্যমন্ত্রী তথা নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) পড়লেন দুর্ঘটনার মুখে। নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া বাজারে মন্দিরে প্রণামের সময়ে আচমকা ভিড়ের চাপে ধাক্কা, পায়ে চোট মমতার, অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে নন্দীগ্রাম (Nandigram) থেকে কলকাতায় ফিরে এসএসকেএমে ভরতি। ভোটের আগে এই ঘটনায় আরও একবার অন্যভাবে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এল নন্দীগ্রাম। বুধবারের ঘটনার পর থেকে কারণ হিসেবে একাধিক কথা শোনা গিয়েছে। দলের তরফে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব তুলে ধরা হয়েছে, তেমনই বিরোধীদের তরফে উঠে এসেছে ‘নাটক’-এর তত্ত্বও। কিন্তু যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে, সেই বিরুলিয়াবাসীর কী মত? তাঁরা সকলেই বলছেন, ধাক্কা দেওয়া হয়নি, দুর্ঘটনাই ঘটেছে।
বুধবারই ঘটে গিয়েছে অপ্রত্যাশিত ঘটনা। প্রচারে এসে তাঁদের এলাকায় বড় চোট পেয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যন্ত্রণায় কাতর হয়ে কলকাতার হাসপাতালে ভরতি তিনি। এই অবস্থায় তৃণমূল কর্মী, সমর্থক তথা রাজ্যবাসীর অনেকেই অকুস্থল নিয়ে নানা কথা বলতে শুরু করেছেন। দুর্ঘটনার দায় যেন বিরুলিয়ার! ঘটনার পর কিছুটা থমথমে বিরুলিয়া বাজার এলাকা। কিন্তু ‘ষড়যন্ত্রে’র তত্ব কিছুতেই মানতে চাইছেন না তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রীর এই পরিস্থিতির জন্য একটি তত্বেই একমত গোটা বিরুলিয়া। তা হল, দুর্ঘটনা। কেউ তাঁকে ধাক্কা দেয়নি, নেহাৎই দুর্ঘটনার জেরে এমনটা হয়েছে। বিরুলিয়া বাজার সংলগ্ন প্রত্যেকের মুখে শোনা গেল এই কথাই।
[আরও পড়ুন: স্লোগান তুলে ভোট প্রচারে শিশুরা! খেজুরিতে বিতর্কে বিজেপি প্রার্থী]
মন্দিরে প্রণামের সময়ে ধাক্কাধাক্কিতে মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে চোট লাগার পর সামনের একটি চায়ের দোকানে তাঁকে বসানো হয়েছিল। দোকানের এক কর্মী, বয়সে একেবারে তরুণ, তাঁর ব্যথা কমাতে বরফ দিয়েছিলেন। ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’কে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলছেন, ”গাড়ির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে প্রণাম করছিলেন। এমনই এই সব গাড়ির দরজা বেশ ভারী হয়। ভিড়ের চাপে তিনি টাল সামলাতে পারেননি আর তারপর গাড়ির দরজাতেই পায়ে ধাক্কা লেগেছে।” পাশের বাড়ির দুই মহিলারও একই মত। তাঁরা বলছেন, ”কেউ ধাক্কা দেয়নি। এটা মিথ্যে প্রচার চলছে। একটা দুর্ঘটনা নিয়ে মিথ্যে প্রচার মোটেই কাম্য নয়। এমন কেন বলা হচ্ছে? আর এসব বলা হচ্ছে বলেই আমাদের এখানে অশান্তির আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে, যা আগে কখনও হয়নি।” প্রত্যক্ষদর্শীদের কথা থেকে একটা বিষয় উঠে আসছে, তৃণমূলের ‘ষড়যন্ত্রে’র তত্ব মানতে মোটেই রাজি নন বিরুলিয়াবাসী।