সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার (Coronavirus) বিরুদ্ধে হাতিয়ার তৈরিতে পথ দেখিয়েছিলেন। বিলিতি ফরমুলায় ভারতে প্রথম কোভিড টিকা উৎপাদন করেছিল তাঁর সংস্থা। কিন্তু এবার করোনা ও সেই সংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে অত্যন্ত বিরক্তি প্রকাশ করলেন সেরাম ইনস্টিটিউটের (SII) কর্ণধার আদর পুনাওয়ালা। বৃহস্পতিবার এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে করোনা টিকার বুস্টার ডোজ প্রসঙ্গে তিনি সাফ জানালেন, ”কোভিড, টিকাকরণ এসব নিয়ে মানুষ খুব বিরক্ত। সত্যি কথা বলতে, আমিও বিরক্ত।” আর সেই বিরক্তির কারণেই বুস্টার বা প্রিকশন ডোজ নিয়ে মানুষের এত অনীহা বলে মনে করছেন তিনি।
২০২০ সালের গোড়ার দিক থেকে বিশ্বজুড়ে ত্রাস ছড়ায় কোভিড-১৯ (COVID-19)। চিনের ইউহান প্রদেশের বাজার থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে বলে জানা গিয়েছে। সেই বাজারে সামুদ্রিক প্রাণী বিক্রি হত। মারণ ভাইরাস দ্রুত দাপট দেখাতে শুরু করে। তাকে কাবু করতে প্রতিষেধক তৈরির ফর্মুলা খোঁজার কাজে নেমে পড়েন প্রথম বিশ্বের বিজ্ঞানীরা। ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে একযোগে কাজ শুরু করে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। তাদের দেখানো ফর্মুলায় প্রথম টিকা উৎপাদনের কথা জানান সংস্থার কর্তা আদর পুনাওয়ালা (Adar Poonawalla)। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সেরামের তৈরি টিকা ‘কোভিশিল্ড’ নেওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়।
[আরও পড়ুন: বিয়ে করতে ‘অস্বীকার’ প্রেমিকের! হেমতাবাদ থানার শৌচালয়ে ঢুকে আত্মঘাতী কিশোরী]
সেরামের তৈরি টিকা ‘কোভিশিল্ড’ (Covishield) করোনা প্রতিরোধে কতটা সফল, তা সময়ই বলবে। তবে পরবর্তী সময়ে কোভিশিল্ডের বুস্টার ও প্রিকশন ডোজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে শৈথিল্য দেখা গিয়েছে সেরামের। এবার সেই কারণই ব্যাখ্যা করলেন সেরাম কর্তা। উন্নয়নশীল দেশগুলির ভ্যাকসিন ম্যানুফ্যাকচারারস নেটওয়ার্কের বার্ষিক বৈঠকে পুনাওয়ালা জানান, মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার আর আগ্রহ নেই। তাঁরা উদাসীন। আসলে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সকলে খুব বিরক্ত। তিনি আরও বলেন, ”২০২১ সালে কয়েকশো মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন আমাদের স্টকে ছিল, কিন্তু ১০০ মিলিয়ন ডোজ নষ্ট হয়ে যায়। এরপর ডিসেম্বর থেকে আমরা টিকা উৎপাদনের কাজ বন্ধ করে দিই।”
[আরও পড়ুন: ভিনরাজ্যে গা ঢাকা দিয়েও হল না শেষরক্ষা, গ্রেপ্তার হাওড়ার ‘পাণ্ডে ব্রাদার্স’-সহ ৪]
কোভিড টিকা নিয়ে চিকিৎসক মহলের একটা অংশের মত, প্রতি বছরই করোনা প্রতিষেধক নিতে হবে। কারণ, প্রতিটি টিকার আয়ু একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর ফুরিয়ে যায়। ফলে প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমবে। তাই নিয়মিত টিকা নেওয়া দরকার। আর এ বিষয়েই পুনাওয়ালার বক্তব্য ভিন্ন। তিনি বলছেন, এখনই মানুষের মধ্যে বুস্টার ও প্রিকশন ডোজ নিতে অনীহা দেখা যাচ্ছে। আসলে আমাদের দেশে কোনও ফ্লু বা অন্য কোনও অসুখে টিকা নেওয়ার প্রবণতা তেমন নেই। H1N1 ফ্লু সংক্রমণের সময়ও টিকা নেননি অনেকে। ২০২০-২১ সালে মহামারী প্রতিরোধের জন্য তৈরি নতুন ভ্যাকসিনের একাধিক ডোজ নেওয়ার ফলে এখন আর কেউ তা নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।