স্টাফ রিপোর্টার: হেলে পড়া, ভেঙে পড়া, জরাজীর্ণ সব ইমারত। কিন্তু তারই আনাচে-কানাচে রত্নভাণ্ডার। বউবাজারে (Bowbazar) দুর্গা পিতুরির ধস কবলিত তল্লাটজুড়ে ছড়িয়ে থাকা সোনার গয়নার কারখানা ঘিরে উদ্বেগ, আতঙ্ক জেঁকে বসেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে। কারখানাগুলির সঙ্গে যাঁদের ভবিষ্যৎ আষ্টেপৃষ্টে বাঁধা, তাঁদের মনেই ঘোর অন্ধকার। এখানকার বাসিন্দাদের তো হোটেলে থাকার জায়গা হল। কিন্তু তাঁদের কী হবে!
বিয়ের মরশুম এখন। সর্বক্ষণই সেখানে চলত ঠোকাঠুকির কাজ। কিন্তু বাড়িতে ফাটল আসতেই সিন্দুক খালি করে সব রত্ন বের করে আনতে হয়েছে। তা রাখবেনই বা কোথায়! উদ্বেগের স্বর কারিগরদের গলায়। বুধবার রাতে তাড়াহুড়োতে কারখানাতেই রয়ে গিয়েছিল হার, বাউটি, বালা, নেকলেস, চূড়, সোনার মুকুটও। বৃহস্পতিবার এখানকার কারিগররা তা বের করে নিয়ে আসেন। কিন্তু তারপর!
[আরও পড়ুন: বঞ্চনার অভিযোগ, ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা চেয়ে ফের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর]
ভাঙা বাড়ির বাইরে তাই মাথায় হাত দিয়ে বসে অমরনাথ মাইতি, আনন্দ সাহা, গৌতম হাজরারা। তাঁদের কারখানা তখন পুলিশ এবং ব্যারিকেডে ঘেরা। প্রায় শ’দুয়েক লোকের রুটিরুজি আটকা পড়ল সেই ব্যারিকেডে। মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা আনন্দ সাহা যেমন বললেন, “বিয়ের জন্য তিনটি হার অর্ডার আছে। রবিবার ডেলিভারি দেওয়ার কথা। বার বার ফোন আসছে দোকান থেকে। কিন্তু কোথা থেকে দেব! কী যে হবে কে জানে!”
বিভিন্ন নামকরা স্বর্ণ বিপনীর গয়না তৈরি হয় এখানকারই ছোট ছোট ঘরে। ১৯ নম্বর দুর্গা পিতুরি লেনের তলায় প্রায় ১০টি কারখানা রয়েছে। পাশাপাশি ফাটল ধরা বাড়িগুলোতেও প্রায় সমসংখ্যক সোনার গয়না তৈরির কারখানা। সবমিলিয়ে এদিন তালা ঝুলেছে ৫৫টিতে। তাঁরা কোথায় যাবেন! কোথায় কাজ করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুব্রত কর বলেন, “যে বাসিন্দাদের বাড়িতে ফাটল হয়েছে, তাঁদের অন্যান্য হোটেলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখানকার প্রায় শ’দুয়েকের বেশি কর্মচারীর কাজ বন্ধ হল। সোনার গয়না বের করতে পারলেও সেগুলো রাখব কোথায় বুঝতে পারছি না।”