shono
Advertisement

অটলের স্মৃতিস্থলে পর্যটকের ঢল, এখনও নেভেনি চিতার আগুন

কাল ভস্ম নিতে আসবেন পালিতা কন্যা নমিতা৷ The post অটলের স্মৃতিস্থলে পর্যটকের ঢল, এখনও নেভেনি চিতার আগুন appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 03:46 PM Aug 18, 2018Updated: 04:16 PM Aug 18, 2018

নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: চিতার আগুন এখনও নেভেনি। চিতাভষ্ম থেকে কুণ্ডলী পাকিয়ে উঠছে ধোঁয়া। সেই ধোঁয়াই যেন স্বর্গরথ হয়ে ধরা দিচ্ছে অনুরাগীদের চোখে। গতকালই পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গিয়েছে অটলবিহারী বাজপেয়ীর নশ্বর দেহ। কিন্তু তাঁর আত্মা, যা তাঁর ব্যক্তিত্বের মতোই অমর। ধোঁয়ার মধ্যে সেই আত্মারই অস্তিত্ব যেন খুঁজে পেতে চাইছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর গুণগ্রাহীরা। তাই তো এই প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদের অন্ত্যেষ্টিস্থল শনিবার থেকেই দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়ে গেল৷

Advertisement

এদিন সকাল থেকেই সেখানে দর্শনার্থীদের ভিড়। ভিড়ের মধ্যে অধিকাংশ পর্যটক হলেও বিজেপির বেশ কিছু কর্মী, সমর্থকও চোখে পড়ল। দর্শনার্থীদের মধ্যে মোবাইল ক্যামেরায় ছবি তোলার হিড়িক। দূর থেকেই চিতার ধোঁয়া স্পষ্ট দৃশ্যমান৷ পাশে জ্বলন্ত প্রদীপ। নিরাপত্তার ঘেরাটোপ রয়েছে, এখনও তাই একেবারে কাছে যাওয়ার সুযোগ নেই কারুরই। তারই মধ্যে ধিকিধিকি করে এখনও জ্বলতে থাকা চিতার ধোঁয়াকে ক্যামেরাবন্দি করতে চেষ্টার কোনও কসুর কেউই বাকি রাখতে চাইছেন না৷

[কেরলে বন্যা দুর্গতদের সাহায্যার্থে ক্রীড়ামহল, পাশে থাকার বার্তা মেসিদের]

স্মৃতিস্থলের গেটের বাইরে বাজপেয়ীর হাসিমুখের বিশাল ছবি৷ ভিতরে পা দেওয়ার আগেই দর্শনার্থীরা সেখানে দাঁড়িয়ে একপ্রস্থ ছবি তুলে নিচ্ছেন৷ সাংবাদিকতার ভাষায় ‘এসট্যাবলিশমেন্ট শট’। সেখান থেকে ভিতরের দিকে খানিকটা হেঁটে গেলেই বাজপেয়ীর চিতা চোখে পড়বে। ছোটখাটো ভিড় দেখে আগত দর্শনার্থীরা সোজা সেদিকেই হাঁটা লাগাচ্ছেন। সেখানেই আলাপ হল ওড়িশার কটক থেকে আসা নির্মলা শেঠির সঙ্গে। বছর পঞ্চাশের ভদ্রমহিলা দিল্লিতে কর্মরত ছেলের বাড়িতে দিনকয়েক আগেই এসেছেন।

[‘এখনই হেলিকপ্টার পাঠান, নাহলে মৃত্যু হবে ৫০ হাজার মানুষের’]

বাজপেয়ী মারা যাওয়ার খবর শোনার পরেই মরদেহ একঝলক দেখার আশায় শুক্রবার বিজেপির সদর দপ্তরে গিয়েছিলেন। সেখানে ভিড় ঠেলে দর্শনও করতে পেরেছিলেন। ইচ্ছা ছিল সেদিনের অন্ত্যেষ্টি দেখারও। কিন্তু সেখানে আগে থেকে বিশেষ অনুমতি নেওয়ার মতো নানান ঝামেলা থাকায় ইচ্ছাপূরণ হয়নি। তাই কোনও দেরি না করে শনিবার সকালেই স্বামীকে বগলদাবা করে রাষ্ট্রীয় স্মৃতিস্থলে চলে এসেছেন। কেন এসেছেন! প্রশ্ন করতেই নির্মলার জবাব, “জানেন আমার না বাজপেয়ীজিকে খুব ভাল লাগত। রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত রয়েছি। কিন্তু সেটা এখানে আসার কারণ নয়। খুব ইচ্ছা করছিল একবার তাঁর অন্তিম স্থলটা দেখতে, তাই আর দেরি করলাম না। এখন মনে হচ্ছে ভালই করেছি। চিতাটাও দেখতে পেলাম।” কাছে গিয়ে প্রণাম করতে চেয়েছিলেন নির্মলা কিন্তু কড়া নিরাপত্তার জন্য তা সম্ভবপর হয়নি৷ চিতার অনতি দূরেই গাছের ছায়াতে গোল হয়ে বসে অনেকক্ষণ ধরেই গল্প গুজব করছিলেন একদল মানুষ৷ তাঁদের কাছে এগিয়ে যেতেই কথাবার্তা যেটুকু কানে এল বুঝলাম বিজেপির কর্মী, সমর্থক।

[ফেসবুকে বাজপেয়ীর সমালোচনা, অধ্যাপককে গণপিটুনি দিয়ে পোড়ানোর চেষ্টা]

কানখাঁড়া করে যেটুকু বুঝলাম তাঁদের আলোচনার মূল বিষয়, বাজপেয়ীজি কত বড় নেতা ছিলেন। তাঁদের মধ্যেই নাগপুর থেকে আগত এক সংঘ পরিবারের সদস্যের সঙ্গে আলাপ হল৷ তিনি অনেকবারই বাজপেয়ীকে সামনে থেকে দেখেছেন। সেই অভিজ্ঞতার গল্প সকলেই মন দিয়ে শুনছিল। আবার তাদের মধ্যেই বেশ কয়েকজন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উগ্র সমর্থক। বাজপেয়ীর অন্তিম যাত্রায় মোদীর জন্যই এত লোকসমাগম হয়েছিল বলে তাঁদের দাবি। অন্তিমযাত্রায় শববাহী শকটের কাছাকাছিই তাঁরা ছিলেন এবং মোদি যে হাঁটছেন তা তাঁরা প্রথমে বুঝতেই পারেননি। আর যখন বুঝতে পেরেছেন তখন তা নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন মনে করেননি বলেই পাল্টা মোদি ভক্তদের একপ্রকার ভৎসনা করছিলেন তাঁরাও। সকাল থেকেই লোকজন দর্শন করতে আসছেন বলে জানালেন স্মৃতিস্থলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফের আধিকারিক নীতিশ কুমার। প্রতিদনই আট ঘণ্টা করে তাঁর এখানে ডিউটি থাকতে হচ্ছে৷

The post অটলের স্মৃতিস্থলে পর্যটকের ঢল, এখনও নেভেনি চিতার আগুন appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement