নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুর: ভবিষ্যতে সরকারি চাকরি পাওয়ার আশায় জঙ্গলপথে ভুয়ো ল্যান্ডমাইন পুঁতে রেখে মাওবাদী হিসাবে পরিচিত হতে চায় স্থানীয় দুষ্কৃতীরা। আসতে চাইছে প্রচারের আলোয়। যাতে তাদের নামে মাওবাদী মামলা দেওয়া থাকে পুলিশের পক্ষ থেকে। আত্মসমর্পণ করে তারা সরকারি চাকরি পেতে চায়। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল পুলিশি তদন্তে।
পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেছেন, “স্থানীয় তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই সরকারি চাকরি পাওয়ার লোভে ভুয়ো বিস্ফোরক রেখে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
উল্লেখ করা যেতে পারে গত মার্চ মাসের ১৭ তারিখে রঞ্জার জঙ্গলে পিড়াকাটা থেকে জয়পুর যাওয়ার রাস্তায় একটি কালভার্টের নিচে একটি সন্দেহজনক পাইপ পোঁতা অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। সেই পোঁতা পাইপ থেকে দু’টি তারও বেরিয়ে থাকতে দেখা যায়। অনেকটা ডিরেকশনাল মাইনের মতো দেখতে ওই সন্দেহজনক বস্তুটি স্থানীয় লোকজনের নজরে আসতেই তারা স্থানীয় পিড়াকাটা ফাঁড়িতে খবর দেয়। আসে পুলিশ। পরে বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের লোকজন এসে সেটিকে জঙ্গলের মধ্যে নিরাপদে নিয়ে গিয়ে নিষ্ক্রিয় করে।
[আরও পড়ুন: অন্য যুবকের সঙ্গে প্রেমিকার সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহের বশেই খুন! কীর্ণাহার কাণ্ডে প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য]
পুলিশ সুপার বলেছেন, “ওই তিন দুষ্কৃতী সেটিকে ইচ্ছাকৃতভাবে সেখানে পুঁতে রেখেছিল।” এখন জঙ্গলমহলে যত ল্যান্ডমাইন উদ্ধারের খবর আসছে তার মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে যে, সেগুলি স্থানীয় দুষ্কৃতীদের কাজ। মাওবাদী নামে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা মাত্র।
একসময় মাওবাদীদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের জন্য সরকারি চাকরি থেকে শুরু করে নানারকম আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা করেছিল। সেই সূত্র ধরে আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী নেতা-নেত্রীদের অনেকেই এখন রাজ্য সরকারের এনভিএফ, হোমগার্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদে কর্মরত। সেই লোভই পেয়ে বসেছে জঙ্গলমহল এলাকার কিছু যুবককে। তাদের ধারণা, পুলিশের খাতায় মাওবাদী হিসাবে নাম তুলতে পারলেই আত্মসমর্পণ করে তারা সরকারি চাকরি পেয়ে যাবে। বিষয়টি ভাবাচ্ছে পুলিশক ও প্রশাসনকে।