shono
Advertisement

করোনার কোপে শেষবার দেখা হল না প্রিয় ‘তমাদা’কে, বিধায়কের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ ফলতা

ফলতার উন্নয়নের কারিগর তমোনাশ ঘোষকে কোনওদিন ভুলবে না স্থানীয়রা। The post করোনার কোপে শেষবার দেখা হল না প্রিয় ‘তমাদা’কে, বিধায়কের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ ফলতা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 04:07 PM Jun 24, 2020Updated: 04:07 PM Jun 24, 2020

সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: বিধায়ক তমোনাশ ঘোষের মৃত্যুতে গোটা ফলতাজুড়ে বুধবার শোকের ছায়া। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও কর্মীরা প্রিয় নেতার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ। তাঁদের আফশোস, করোনা আবহে একবার শেষ দেখাটাও দেখতে পেলেন না তাঁরা তাঁদের প্রিয় ‘তমাদা’কে। এলাকার উন্নয়নে তিনবারের বিধায়কের অবদান এদিন চোখের জলে স্মরণ করেছেন ফলতার মানুষ।

Advertisement

২০০১ সালে প্রথম ফলতার বিধায়ক নির্বাচিত হন তমোনাশ ঘোষ। এরপর ২০০৬ সালে পরাজিত হলেও পরপর দু’বার ২০১১ ও ২০১৬-তে পুনরায় ফলতার বিধায়ক নির্বাচিত হন তিনি। ফলতার মানুষের জন্য অসংখ্য কাজ করে গিয়েছেন তিনি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফলতা-মথুরাপুর জলপ্রকল্প, ফলতার নৈনান থেকে ধর্মতলা ও আন্তঃজেলা সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পরিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ, আইটিআই কলেজ স্থাপন। ফলতা বাণিজ্য কেন্দ্রে শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক স্থাপন এবং মালিকপক্ষের সঙ্গে লাগাতার আলোচনায় শ্রমিকদের মজুরিবৃদ্ধির কৃতিত্ব তাঁরই। কেন্দ্রীয় সরকারের ডোঙারিয়া জলপ্রকল্পটি মূলত তাঁরই তদ্বির-তদারকিতে ফলতা হয়ে মথুরাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়। সেই কাজ এখন শেষপর্যায়ে। এই প্রকল্পে হুগলি নদীর লবণাক্ত জলকে পরিশুদ্ধ করে পাইপলাইনের মাধ্যমে তা পানীয়জল হিসেবেই সরবরাহ করা হবে ফলতা-সহ এক বিস্তীর্ণ অংশে।

ফলতা বিধানসভা এলাকায় সেই কাজের প্রায় আশি শতাংশই সম্পূর্ণ। এছাড়াও তাঁরই উদ্যোগে ফলতায় ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পরিশুদ্ধ পানীয় জল রিজার্ভারে সংগ্রহ করে সেই জল এলাকার মানুষকে সরবরাহের কাজ। তাঁরই আমলে যথেষ্ট উন্নত হয়েছে এলাকার পরিবহন ব্যবস্থাও। নৈনান থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত এসবিএসটিসি বাস পরিষেবা চালু হয়েছে। চালু হয়েছে ফলতা থেকে আন্ত:জেলা বাস পরিষেবাও। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে ব্যবসায়িক দিক থেকে উন্নয়ন ঘটেছে গ্রামের মানুষের। তাঁর পরিকল্পনাপ্রসূত আইটিআই কলেজে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবকদের অনেকেই আজ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত।

[আরও পড়ুন: সময়ে গুরুত্ব দিলে করুণ পরিণতি হত না তমোনাশ ঘোষের, মানছেন চিকিৎসকরা]

বিধায়কের স্মৃতিচারণা করে তৃণমূল নেতা অরুময় গায়েন বলেন, ‘ফলতা বাণিজ্য কেন্দ্রের এক নম্বর সেক্টরের একটি কারখানায় ২০০৮ সালে ছাঁটাই করা হয় প্রায় চারশো শ্রমিককে। ছাঁটাই শ্রমিকদের কাজে ফেরানোর দাবিতে টানা চোদ্দদিন অবস্থানে বসেছিল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন। তা জানতে পেরেই বিধায়ক বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেন কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। শেষপর্যন্ত মালিকপক্ষের সঙ্গে তাঁর আলোচনায় জট খোলে। কাজ ফিরে পান ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকরা।’

অরুময় গায়েন জানান, ফলতা বাণিজ্য কেন্দ্রে শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্কের এক বাতাবরণ তৈরি করেছিলেন বিধায়ক। বাণিজ্যকেন্দ্রের শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির দাবিতে তাঁর সঙ্গে মালিকপক্ষের আলোচনায় একলাফে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি হয়েছিল তিনগুণেরও বেশি। ফলতায় বিধায়কের একসময়ের সর্বক্ষণের সঙ্গী তৃণমূল নেতা ভক্তরাম মণ্ডল জানান, ‘সকালে তমাদার মৃত্যুর খবরটা শুনে প্রথমেই মনে হল একজন অভিভাবককে হারালাম। রাজনৈতিক সম্পর্ক ছাড়াও তাঁর সঙ্গে ছিল মধুর ব্যক্তিগত সম্পর্কও।’ তমোনাশ ঘোষের ছায়াসঙ্গী তৃণমূল নেতা আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ই দেখাশোনা করতেন বিধায়ক তহবিলের টাকায় যাবতীয় কাজকর্ম। গভীরভাবে মর্মাহত তিনিও। ফলতা যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি জাহাঙ্গীর খান বিধায়কের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে বলেন, ‘দাদার অবদান কখনওই ভোলার নয়।’

The post করোনার কোপে শেষবার দেখা হল না প্রিয় ‘তমাদা’কে, বিধায়কের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ ফলতা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement