সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কখনও বাদ মুঘল পর্ব। কখনও বাদ মৌলানা আজাদ। কখনও বাদ ডারউইনের তত্ত্ব। আবার কখনও বাদ গণতন্ত্রের অধ্যায়। একের পর এর বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যক্রম থেকে বাদ নানা প্রসঙ্গ। এবং এই প্রস্তাবের পিছনে রয়েছে এনসিইআরটি (NCERT)। ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং বা রাষ্ট্রীয় শিক্ষা অনুসন্ধান এবং প্রশিক্ষণ পরিষদের এ হেন নির্দেশগুচ্ছে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। যদিও তাদের নির্দেশিকা মেনে গত কয়েক মাসে পরিবর্তন ঘটেছে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রমে। বিরোধীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় শাসকদল বিজেপি তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ ও দৃষ্টিকোণ থেকেই বিষয়গুলি বাদ দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু এনসিইআরটির বক্তব্য, পড়ুয়াদের উপর অকারণ চাপ কমাতেই এই রদবদলের সিদ্ধান্ত। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।
পাঠ্যক্রম থেকে প্রধানত বাদ গিয়েছে বিজ্ঞান, ইতিহাস এবং ভুগোলের বিভিন্ন অধ্যায়। বিরোধীদের অভিযোগ বিজেপির আদর্শের সঙ্গে যে সমস্ত অধ্যায়ের খাপ খাচ্ছে না সেগুলিকেই বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে স্কুলপাঠ্য থেকে। এনসিইআরটি অবশ্য দাবি করছে, পড়ুয়াদের উপর থেকে চাপ কমাতেই এই উদ্যোগ। করোনা (Coronavirus) অতিমারীর সময় এবং তার পরেও দীর্ঘ দিন পড়ুয়ারা বাড়িতে থাকায় তাঁদের অধ্যয়ন সমান তালে হয়নি। এই পরিস্থিতিতে এনসিইআরটি নয়া পাঠ্যক্রমে সমতা রক্ষার চেষ্টা করেছে। বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে দু’টি শ্রেণিতেই রয়েছে এমন পাঠ্যক্রমের পুনরাবৃত্তি এড়ানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: কংগ্রেস ছাড়তে চলেছেন শচীন পাইলট, গড়বেন নয়া দল! সঙ্গী পিকে!]
অন্যদিকে, একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা পর্যায় সারণি পড়ার সুযোগ পাবেন জানিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের পর্যায় সারণি পড়ার কোনও প্রয়োজন নেই।” তাঁর বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে যে শোরগোল হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ অবান্তর। তিনি জানান, ২০২০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে ছাত্র, শিক্ষাজগৎ, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা এবং দেশের মঙ্গলের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন পরিস্থিতি চিহ্নিত করেই পাঠ্যক্রমে বদল আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: ‘উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হবে, দুর্ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করবেন না’, মৃত্যুমিছিলের মাঝে আরজি রেলমন্ত্রীর]
উল্লেখ্য, দশম শ্রেণির পাঠ্যক্রম থেকে ডারউইনের বিবর্তনবাদ বাদ যাওয়ার পর প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১৮০০-র বেশি শিক্ষাবিদ প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন কেন্দ্রকে। বিরোধীদের অভিযোগ, স্কুল স্তর থেকেই গৈরিকীকরণে তৎপরতা শুরু করেছে মোদি সরকার। যার প্রভাব পড়ছে পাঠ্যক্রমে। অন্যদিকে বিজেপির অভিযোগ, পড়ুয়াদের সমস্যা না বুঝে সংকীর্ণ রাজনীতি করছে বিরোধীরা।