বিনিয়োগ করার উদ্দীপনা হয়তো অনেকেরই থাকে। কিন্তু অভিজ্ঞতা কিংবা সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বহুলাংশেরই থাকে না। ফলে অনেককেই ব্যর্থতার সম্মুখীন হতে হয়। এই দশা এড়াতে প্রয়োজন পেশাদারদের পরামর্শ। বিশেষজ্ঞরা বিনিয়োগ করতে গেলে কোন কোন দিকে নজর দিতে বলেন? জানিয়ে দিলেন পার্থপ্রতিম চট্টোপাধ্যায়
মাতলো রে ভুবন ….
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব আসন্ন, সকলের মনেই তাই খুশি খুশি ভাব। সেই ভাবকে আরও উৎসাহিত করেছে শেয়ার বাজারের সর্ব্বোচ্চ উচ্চতাকে ছোঁয়া। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জিজ্ঞাসা একটাই-এই পরিস্থিতিতে কী করা উচিত? সেই প্রসঙ্গে বিনিয়োগের কিছু Golden Rules জেনে নেওয়া যাক।
(১) Existing SIP-কে বন্ধ করবেন না, আপনার বিনিয়োগের কিছু টাকা ডেট ফান্ডে সুইচ করার কথা ভাবতে পারেন। কিন্তু চালু থাকা সিপ বন্ধ করা ঠিক হবে না।
(২) নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করবেন, ভাল প্রফিট পেয়ে অযথা ঝুঁকি নেবেন না বা আপনার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হবেন না।
(৩) আপনার বিনিয়োগের লক্ষ্য পূর্ণ হলেই আপনি ফান্ড উইথড্র করতে পারেন বা সিপ বন্ধ করতে পারেন।
(৪) হাইব্রিড ইকুইটি ফান্ডে বিনিয়োগ করে নতুন ইনভেস্টররা বিনিয়োগের যাত্রা শুরু করতে পারেন।
(৫) সরাসরি স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করার থেকে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা সবসময়ই শ্রেয়। কারণ এখানে আপনি পাবেন এক্সপার্ট ফান্ড ম্যানেজারদের সাহায্য। যা ডাইরেক্ট শেয়ার বিনিয়োগে অনুপস্থিত।
[আরও পড়ুন: সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য ফিক্সড ডিপোজিট, রইল মূল বৈশিষ্ট্যগুলি]
(৬) ইকুইটি বিনিয়োগের সময় সব সময় খেয়াল রাখবেন, আপনার ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা অনুযায়ী লার্জ ক্যাপ, মিড ক্যাপ, স্মল ক্যাপ-সমস্ত ক্ষেত্রেই যেন আপনার অ্যালোকেশন থাকে। এ ব্যাপারে আপনি আপনার বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে পারেন।
(৭) কোনও একটিমাত্রে নির্দিষ্ট ফান্ডে আপনার সমস্ত পুঁজি বিনিয়োগ করবেন না।
(৮) সিপের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের সময় সীমা ধার্য করে ইনভেস্ট করুন। কমপক্ষে ৫ বছরের জন্য ইকুইটি মিউচুয়াল ফান্ডে ইনভেস্ট করুন। এর থেকে কম সময়সীমার জন্য ডেট বা হাইব্রিড ফান্ডে ইনভেস্ট করবেন।
(৯) এককালীন ইনভেস্টমেন্টের জন্য মাল্টি অ্যাসেট ফান্ডকে অাপনার পোর্টফোলিওতে রাখতে পারেন।
(১০) আপনার পোর্টফোলিওর ঝুঁকি কমানোর জন্য গোল্ড বা সিলভারের অংশ ২০% পর্যন্ত রাখতে পারেন। এতে আপনার রিস্ক কিছুটা হলেও কমে আসবে।
(১১) কখনওই নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে বাজারে বিনিয়োগ করবেন না। ছোট ছোট স্পেলে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করবেন। এতে আপনার বিনিয়োগ সুরক্ষিত থাকবে।
[আরও পড়ুন: পাশে আছে ‘Loan-মিত্র’, লগ্নির গাঙে এবার নির্ভয়ে ভাসান তরী]
‘Volatility is a part of the market’-সুতরাং বাজারে ওঠা-পড়া থাকবেই। কিন্তু মাইক্রো এবং ম্যাক্রো ইকোনমিক ফ্যাক্টর থেকে বলা যায় ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি।’ যেটা FII-রা আমাদের মতো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের থেকে এই সত্যটি খুব ভাল জানেন। তাই তাঁরা ইন্ডিয়ার উপর ভরসা রাখেন। আপনিও ভরসা রাখুন। কারণ – ‘ইয়ে তো স্রিফ ট্রেলর হ্যায়, পিকচার তো অভি বাকি হ্যায় মেরে দোস্ত।’
(লেখক ডিরেক্টর, পেরেন্টস ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড)
ইমেল : mail4parthapc@gmail.com