দেব গোস্বামী, বোলপুর: দীর্ঘদিন ধরেই হেনস্তার শিকার বিশ্বভারতীর নৃতত্ববিদ্যা বিভাগের গবেষিকা ছাত্রীরা। এর পরই অধ্যাপকের বিরুদ্ধেই গবেষণাপত্র জমা না নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অফিসে অবস্থানে বসেন এক গবেষিকা ছাত্রী। উপাচার্যের দপ্তরের সামনেই পোস্টার হাতে বিক্ষোভ দেখাতে দেখা যায় ওই ছাত্রীকে। এর পরেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন পর তড়িঘড়ি গবেষণাপত্র জমা নিতে বাধ্য হয়।
গবেষণার মেয়াদ শেষের দিন ছিল চলতি বছরের ১৯ আগস্ট। এতদিন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও সুরাহা মেলেনি। ছাত্রীর অভিযোগ,"সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে গত ১৮ জুন। গবেষণাপত্র জমা দিতে গেলেই জমা না করে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর পরই বেশ কয়েক ঘন্টা প্রতিবাদ করায় ভুল বুঝতে পেরে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জমা নেয় গবেষণাপত্র।" যদিও নৃতত্ব বিভাগের অধ্যাপকের বিরুদ্ধে বিগত কয়েক বছর ধরে বহুবার যৌন ও মানসিক হেনস্তা এবং কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের হয়রান করার অভিযোগ ওঠে। বিশ্বভারতীকে বারবার জানানোর সত্বেও কোনওরকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ এনেছেন সংশ্লিষ্ট ওই ছাত্রী।
[আরও পড়ুন: ৪৩ চিকিৎসকের বদলি স্থগিত, আন্দোলনের জের?]
কলকাতার বাসিন্দা গবেষিকা ছাত্রী উচ্চশিক্ষা লাভের স্বপ্ন নিয়ে গবেষণা করার জন্য বিশ্বভারতীর বিনয় ভবনে। বর্তমানে অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত। নথিভুক্তকরণের সময় মত গবেষণার কাজ প্রায় পরিসমাপ্ত করে চূড়ান্ত উপস্থাপনার ব্যবস্থা করার জন্য গাইড বা পরামর্শদাতা হিসাবে ওই অধ্যাপকের অধীনে কাজ করার সুযোগ মেলে। এর পরই গবেষণা সম্পূর্ণ হওয়ার পরও গবেষণার কাজ আটকে রাখা হয় বলেই অভিযোগ ওঠে। শিক্ষাজীবনের ক্ষতির সম্মুখীন প্রতিকার চেয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্য, পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশন-সহ বিভিন্ন দপ্তরে দারস্থ হয় ওই ছাত্রী। যদিও সেই অভিযোগ এখনও বিচারাধীন। তবে গবেষণাপত্র জমা দেওয়া নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। এরপরই বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিবের মধ্যস্থতায় জমা করা হয় ওই ছাত্রীর গবেষণাপত্র। কিছুটা হলেও স্বস্তি নিঃশ্বাস পেয়েছেন নৃতত্ববিদ্যা বিভাগের গবেষিকা ছাত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ বলেন, "গবেষণাপত্র জমা নেওয়ার ক্ষেত্রে হয়তো কোনও সমস্যা ছিল। যে কোনও বিভাগ থেকে অভিযোগ এলেই বিভাগীয়ভাবে অধ্যক্ষ বা বিভাগীয় প্রধানরা দেখেন। অভিযোগ উঠলেই তদন্ত করে তা দেখাও হয়। এক্ষেত্রে ছাত্রীর গবেষণাপত্র জমা হয়েছে। এখন আর কোনও অসুবিধার কথা নয়।"