shono
Advertisement

বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস মানেই ধর্ষণ নয়! তাৎপর্যপূর্ণ রায় কলকাতা হাই কোর্টের

১৪ বছরের পুরনো মামলায় এই রায় দিলেন বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল।
Posted: 12:23 PM Apr 27, 2023Updated: 12:23 PM Apr 27, 2023

গোবিন্দ রায়: দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের সম্মতিতে সহবাস করলে সেটাকে কখনওই ধর্ষণ বলা যায় না। এক ধর্ষণ (Rape) মামলায় রায় দিতে গিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি শম্পা দত্ত পালের। ১৪ বছরের পুরনো এক মামলায় বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, সম্পর্কে টানাপোড়েন হলেই এই ধরনের বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

Advertisement

মামলার বয়ান অনুযায়ী, ২০০৯ সালে ডানকুনি থানা এলাকায় দুই মুসলিম পরিবার একে অপরের সঙ্গে আত্মীয়তা বাড়ানোর জন্য নিজেদের ছেলে ও মেয়ের (নাম পরিবর্তন করে রাবিয়া এবং জাহাঙ্গির রাখা হল) বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। দুই পরিবারের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ছেলে এবং মেয়ের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু মেলামেশার পর হবু পাত্র জাহাঙ্গীর অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করে কর্মস্থল গোয়াতে বসবাস শুরু করে। এদিকে যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিল, সেই রাবিয়া ডানকুনি থানায় জাহাঙ্গির ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস এবং ধর্ষণের অভিযোগ আনেন।

[আরও পড়ুন: বিতর্ক উপেক্ষা করেই দলিত IAS খুনে দোষী গ্যাংস্টারকে মুক্তি দিল বিহার সরকার! প্রশ্নে নীতীশের নীতি]

জাহাঙ্গীরের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ তাদের ৪১ ধারায় নোটিস পর্যন্ত দেয়নি। সোজা পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৩৭৬ এবং অন্যান্য ধারায় মামলা রুজু করে। জাহাঙ্গিরের বাবাকে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ। যদিও পরে তিনি নিম্ন আদালতে জামিন পান। পাত্রীর করা FIR-এর বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টে পালটা মামলা দায়ের করে পাত্রের পরিবার।

বুধবার বিচারপতি শম্পা দত্ত পালের (Shampa Dutta Pal) এজলাসে মামলা চলাকালীন আবেদনকারীর আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী জানান, পাত্রীর অভিযোগ ভিত্তিহীন। কারণ দু’জনেই প্রাপ্তবয়স্ক। সেক্ষেত্রে দুজনের সম্মতিতেই শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এটাকে ধর্ষণ বলে গণ্য করা যায় না। তাছাড়া পাত্রের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৩৭৬ ধারায় মামলা রুজু করা আসলে ডানকুনি থানার অতিসক্রিয়ার পরিচয়। দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে এবং মেয়ে নিজেদের সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ক করে, সেক্ষেত্রে ছেলের পরিবারের সদস্যদের কোনওভাবেই দোষী সাব্যস্ত করা যায় না। যদিও নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী আদালতে জানান অভিযুক্ত ছেলের পরিবার ধর্ষণে মদত দিয়েছে। এবং মিথ্যা প্রতিশ্রতি দিয়ে মেয়েটির সাথে প্রতারণা করেছে।

[আরও পড়ুন: ৫০ কেজি আইইডি, বিস্ফোরণে ২০ ফুট উঁচুতে ছিটকে যায় গাড়ি, দান্তেওয়াড়া হামলাতেও প্রশ্নে প্রশাসন]

উভয়পক্ষের আইনজীবী বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল নির্দেশ দেন, মহিলার পক্ষ থেকে যে অভিযোগ থানায় করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন, তার কোন আইনি বৈধতা নেই। ছেলের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বাতিল করে দেন তিনি। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে এবং মেয়ে নিজেদের সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হলে সেটা ধর্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয় না। কলকাতা হাই কোর্টের এই ঐতিহাসিক রায় শুধু জাহাঙ্গিরের পরিবারের সদস্যদের স্বস্তি নয়, আগামী দিনে এই ধরনের অভিযোগ সম্পর্কিত মামলায় যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে করছে আইনজীবী মহলের একাংশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement