সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না জোম্যাটোর। প্রথমে মুসলিম যুবকের হাত থেকে খাবার নিতে অস্বীকার করলেন এক ব্যক্তি আর তারপর হাওড়ার ডেলিভারি কর্মীদের ধর্মঘট। ডেলিভারি কর্মীদের দাবি, ধর্মীয় আঘাতকে আঘাত করে তাঁরা খাবার পৌঁছে দেবেন না। কিন্তু সম্প্রতি এমন একটি তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে, যার সঙ্গে শুধু ধর্ম নয়, রাজনীতিরও যোগাযোগ আছে। জানা গিয়েছে, বিজেপির অঙ্গুলিহেলনেই নাকি হাওড়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগ, স্থানীয় বিজেপি নেতা সঞ্জীব কুমার শুক্লার মদতেই নাকি হাওড়ার জোম্যাটো কর্মীরা প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন। এই সঞ্জীব কুমার শুক্লা উত্তর হাওড়ার বিজেপি নেতা। যদিও তিনি নিজে একথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য জোম্যাটোর টুইটের প্রতিক্রিয়া হিসেবেই প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন কর্মীরা। এখানে তাঁর কোনও হাত নেই। কিন্তু স্থানীয়দের মতে, শুক্লা ও বজরং নাথ ভার্মা নামে দুই ব্যক্তি এই ধর্মঘটের পিছনে রয়েছে। গত ১৪ মাস ধরে বজরং ভার্মা জোম্যাটোর সঙ্গে কাজ করছে।
[ আরও পড়ুন: ১৫ আগস্ট সন্ধে থেকে বন্ধ শিয়ালদহ উড়ালপুল, কোন পথে চলবে যানবাহন? ]
বিতর্কের সূত্রপাত দিনকয়েক আগে। মুসলিম ডেলিভারি কর্মীর হাত থেকে খাবার নিতে অস্বীকার করেন এক গ্রাহক৷ তাঁর টুইটের পালটা জবাবে জোম্যাটোর তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় খাবারের কোনও ধর্ম হয় না৷ সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগে ধর্মঘট ডাকেন হাওড়ার জোম্যাটো ডেলিভারি কর্মীরা৷ বিভিন্ন রেস্তরাঁয় বর্তমানে মুরগির মাংসের পাশাপাশি গরু কিংবা শুয়োরের মাংসের পদও থাকে৷ ক্রেতারা নিজেদের ইচ্ছামতো খাবার অর্ডার করেন৷ কিন্তু হিন্দু এবং মুসলমান ডেলিভারি কর্মীরা গরু কিংবা শুয়োরের মাংসের অর্ডার পৌঁছে দিতে রাজি নন৷ ধর্মীয় মতাদর্শের বাইরে গিয়ে কোনও কাজ করতে চাইছেন না তাঁরা৷ একথা জোম্যাটো কর্তৃপক্ষকেও তাঁরা জানিয়েছেন৷ তবে অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনও সদুত্তর মেলেনি৷ তাই বাধ্য হয়ে সোমবার বকরি ইদের দিন থেকেই কর্মবিরতির পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জোম্যাটোর হাওড়ার ডেলিভারি কর্মীরা৷
ডেলিভারি কর্মীদের আরও দাবি, সরবরাহকারীকে পছন্দ না হলে অর্ডার বাতিল করতে পারেন ক্রেতারা৷ কিন্তু ডেলিভারি কর্মীরা কখনওই খাবারের অর্ডার বাতিল করতে পারেন না৷ কারণ তাঁদের সেই ক্ষমতা নেই৷ যদি কোনও ডেলিভারি কর্মী অর্ডার বাতিল করেন, তবে তার কারণ দেখাতে হয় ম্যানেজারকে৷ যথোপযুক্ত কারণ না দেখালে চাকরি পর্যন্ত খোয়াতে হতে পারে ওই কর্মীকে৷ তাই কর্তৃপক্ষের তরফেই বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা উচিত বলেই দাবি পরিবেশকের৷ যদিও এরপর জোম্যাটোর তরফ থেকে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।