shono
Advertisement

নাড়ু-মোয়া অতীত, বিজয়ার প্লেটে পিৎজা-বার্গার!

বিক্রি কমছে মিষ্টির।
Posted: 04:28 PM Oct 26, 2023Updated: 04:28 PM Oct 26, 2023

নব্যেন্দু হাজরা: হাতে পাকানো নাড়ু, নারকেলের সন্দেশ, মোয়া, নিমকি। কিংবা বাটি ভরতি ভুরভুরে সুবাস ছড়ানো ঘুগনি। বাঙালির বিজয়া উদযাপনের অঙ্গাঙ্গী এইসব অনুষঙ্গ এখন কার্যত অতীতের খাতায়। তার জায়গা নিচ্ছে পিৎজা (Pizza), ভুজিয়া, বার্গার (Burger)। কিংবা নামী ব্র‌্যান্ডের কেক-প‌্যাস্ট্রি। ফলে বিজয়ার মিষ্টির দোকানের ভিড় বেশিরভাগ জায়গাতেই বেশ হালকা। বরং ভিড় বেশি প‌্যাস্ট্রি, পিৎজার দোকানে। সবমিলিয়ে বিজয়া দশমীর (Subho Bijoya) পরের কয়েকটা দিন এখন নষ্ট্যালজিয়ায় ভোগা ছাড়া বয়স্ক প্রজন্মের কিছুই করার নেই। কিন্তু বিজয়ার প্লেটের এই পরিবর্তনের কারণটা কী?

Advertisement

বিভিন্ন মহলের বক্তব্যে নানাবিধ কারণের সমাহার। তাতে আর্থিক, সামাজিক, স্বাস্থ‌্য এমন বিবিধ মাত্রাও বর্তমান। অনেকের মতে, বাঙালির পুরনো পাড়া কালচার বিলুপ্তপ্রায়। বাড়ি বাড়ি দল বেধে বিজয়া করতে যাওয়ার চল প্রায় উঠেই গিয়েছে, ফ্ল‌্যাটবাড়িতে তো উল্টোদিকের প্রতিবেশীর সঙ্গেই কালেভদ্রে কথা হয়। তাই ‘বিজয়া করতে’ নিয়ম করে অন্যের বাড়ি যাওয়ার পাট উঠতে চলেছে। উপরন্তু আজকালকার কর্মরত দম্পতিদের পক্ষে নাড়ু-মোয়া বানানো কঠিন। এগুলো বাজারে রেডিমেড পাওয়া গেলেও বেশিরভাগ মানুষ অতিথি আপ‌্যায়নের জন‌্য পিৎজা, বার্গারই পছন্দ করছেন।

মিষ্টি ব‌্যবসায়ীদের গলাতেও এই একই তত্ত্বের সমর্থন। দশমীর সন্ধ‌্যা বা একাদশীর দিন যে পরিমাণ মিহিদানা, সীতাভোগ বা অন‌্যান‌্য মিষ্টি বিক্রি হত তার তিরিশ শতাংশ অন্তত কমে গিয়েছে। শহর থেকে জেলার মিষ্টির দোকানে যে ভিড় তার বেশিরভাগই মিহিদানা, সীতাভোগের জন‌্য। তাছাড়া কুচো গজাও বিক্রি ভালোই হচ্ছে। কিন্তু আগে যে পরিমাণ মিষ্টি বিক্রি হত, এখন তেমনটা আর হয় না। আর মানুষও এখন স্বাস্থ‌সচেতন। সুগারের ভয়ে মিষ্টি খাওয়া কমিয়েছেন। তাঁদের কথা ভেবে সুগার ফ্রি মিষ্টির তালিকা বেড়েছে মিষ্টির দোকানগুলোতে। তবে চিরাচরিত, শুভ বিজয়া বা শারদীয়া লেখা মিষ্টির বিক্রি এখনও আছে।

[আরও পড়ুন: টাকার বদলে প্রশ্ন ইস্যুতে মহুয়ার বিপদ বাড়ছে? এবার তৃণমূল সাংসদকে তলব এথিক্স কমিটির]

সমাজতত্ত্ববিদদের কথায়, আসলে লোকে মিষ্টি কিনে করবে কী! বর্তমান ফ্ল‌্যাট কালচারে পাশের বাড়ির লোকই অচেনা। ফলে মিষ্টি দেওয়া-নেওয়ার রীতিতেই ছেদ পড়েছে কার্যত। আগের মতো বাড়ি বাড়ি বন্ধু-বান্ধবরাও যান না বিজয়া করতে। তবে মিষ্টির দোকানে বিজয়ার বেচা-কেনা কিছুটা কমলেও পিৎজা, কেক, প‌্যাস্ট্রির দোকানে ভিড় বেশ বেড়েছে। বুধবার সিঁথির মোড়ের এক পেস্ট্রির দোকানে তো সকাল থেকে রীতিমতো লাইন পড়ে গিয়েছে। দিনভর সেই ভিড় বজায় রইল।

অনেকেই বলছেন, আগে মা-কাকিমারা পুজোর আগে থেকেই নাড়ু-মোয়া-নিমকি বানাতেন। বিজয়ার দিন বাড়ি বাড়ি যা দেওয়া হত। কিন্তু এখন এগুলো বানাবে কে! বর্তমান প্রজন্মের অধিকাংশই নাড়ুর পাক কীভাবে হয় জানে না। মোয়া, নিমকি তো দূর অস্ত। তাই প্লেটে এখন জায়গা করেছে কেক-পেস্ট্রি। হাওড়ার নবান্নের কাছের মিষ্টির দোকানের মালিক সৈকত পাল মেনেও নিলেন সেকথা। তিনি বলেন, ‘‘বিজয়া দশমীতে মিষ্টি বিক্রি তো হবেই। কিন্তু আগের তুলনায় দশমীর বাজার ড্রপ করছে। মানুষ আগে যে পরিমাণ মিষ্টি কিনতেন, এখন আর কেনেন না। তবে কুচো গজা, সীতাভোগ, মিহিদানার বিক্রিই বেশি।’’

[আরও পড়ুন: ভোটমুখী রাজস্থানে তৎপর ED, সমন গেহলটের ছেলেকে, কংগ্রেস সভাপতির বাড়িতেও তল্লাশি]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement