সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনাসুরের তাণ্ডবে হাহাকার চলছে পুরো বিশ্বজুড়ে। প্রতিমুহূর্তে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। অন্য দেশের মতো সংক্রমণ রুখতে লকডাউন চলছে বাংলাদেশেও। এর ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন প্রচুর মানুষ। দুদিন আগে তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার দেশের সমস্ত অসহায় মানুষের কাছে প্রশাসনকে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন তিনি। করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য আগামী তিন বছরের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় করোনা (Corona) পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত ৯ টি জেলার প্রশাসনিক আধিকারিক, জনপ্রতিনিধি ও চিকিৎসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন হাসিনা। আর শুরুতেই উত্থাপন করেন, টাঙ্গাইল জেলার সখীপুরে এক বৃদ্ধাকে তাঁর স্বামী ও সন্তানদের জঙ্গলে ফেলে যাওয়ার ঘটনার। মনে করিয়ে দেন, সবাইকে সুরক্ষিত থাকবে মানে এই নয় যে অমানবিক আচরণ করতে হবে। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিজের মাকে জঙ্গলে ফেলে আসার চেয়ে অমানবিক ঘটনা আর হয় না। কারও করোনা হয়েছে বলে সন্দেহ হলে তাঁর চিকিৎসা করান আর নিজেরাও সুরক্ষিত থাকুন। কোনও চিকিৎসক আক্রান্ত না সত্ত্বেও তাঁকে এলাকা ছাড়া করার চেষ্টা হচ্ছে। সেইসব ঘটনা ঘটতে দেওয়া যাবে না।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে হাজারের গণ্ডি পেরল করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, মৃত ৪৬ ]
এরপরই তিনি কারা কোন দলের ভোটার তা না দেখেই ত্রাণ দেওয়ার তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দেন প্রশাসনকে। বলেন, কে কোন দলের ভোটার তা না দেখেই নামের তালিকা তৈরি করুন। আওয়ামি লিগ দলের জন্য নয়, জনগণের জন্য রাজনীতি করে। তাই আমরা চাই, যাঁরা সত্যিই অসহায় তাঁরা যেন কোনওভাবে বঞ্চিত না হন। ইতিমধ্যে আরও ৫০ লক্ষ রেশন কার্ড তৈরি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত গোটা দেশে ১৪ হাজার ৮৬৮ জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ২৩১ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা ও সংলগ্ন জেলাগুলিতেই ৭০ শতাংশ করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছে। গোটা বিশ্ব যখন ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছে তখন আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার ফলেই বাংলাদেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। তবে প্রবাসে থাকা বাংলাদেশিদের জন্য খুব বেশি কিছু করতে পারিনি। তাই সেখানে অনেকে মারা গিয়েছেন। আগামীদিনেই এভাবে সরকারের পাশে থাকতে হবে সাধারণ মানুষকে। নমাজ বাড়িতে বসেই পড়তে হবে। সংক্রমণ রুখতে সৌদি আরবে মসজিদে বা প্রকাশ্যে নমাজ পড়া বন্ধ হয়েছে। এমনকী তারাবিহ নমাজে ঘরেই পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এখানেও ঘরে বসে তারাবিহ নমাজ পড়তে হবে।’
[আরও পড়ুন: করোনায় প্রাণহীন পয়লা বৈশাখ! অনলাইনে উৎসবে মাতল বাংলাদেশ]
The post ‘দলবাজি নয়, প্রকৃত অসহায়কে ত্রাণ পৌঁছে দিন’, প্রশাসনকে নির্দেশ শেখ হাসিনার appeared first on Sangbad Pratidin.