সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেখতে দেখতে এক বছর পূর্ণ হল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের। তবে এখনও সংঘাত থামার কোনও লক্ষণ নেই। বিশ্বায়নের যুগে হাজার হাজর কিলোমিটার দূরের এই রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের আঁচ ভালই পড়ছে ভারতে। কূটনীতির দড়িতে ভারসাম্যের কঠিন খেলায় নামতে হয়েছে দিল্লিকে। এবার এই যুদ্ধের ছায়া পড়েছে দিল্লিতে চলা জি-২০ গোষ্ঠীর বৈঠকেও। আজ বৃহস্পতিবার বৈঠকের শুরুতে স্বাগত ভাষণে সুকৌশলে ইউক্রেন প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেন প্রধামনন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একইসঙ্গে, ঋণ নিয়ে ইঙ্গিতে চিনকে খোঁচা দিতেও ছাড়েননি তিনি।
ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে এবছর জি-২০ গোষ্ঠীর সভাপতি পদে বসেছে ভারত। আজ দিল্লিতে শুরু হয়েছে জোটের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক। সেখানে হাজির রয়েছেন আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ, ব্রিটেনের বিদেশসচিব জেমস ক্লেভারলিও চিনের বিদেশমন্ত্রী কিন গ্যাং-সহ অনেকেই। বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আমেরিকা ও রাশিয়ার কাছে জোটের একটি গ্রহণযোগ্য বিবৃতিতে সহমত আদায় করাই ভারতের কাছে চ্যালেঞ্জ। আজ বৈঠকের শুরুতে স্বাগত ভাষণে সুকৌশলে ইউক্রেন প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেন প্রধামনন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওয়াশিংটন ও পশ্চিমের দেশগুলির চাপ সত্ত্বে ‘বন্ধু’ রাশিয়াকে আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তাৎপর্য়পূর্ণ ভাবে, এদিন অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জি-২০ গোষ্ঠীর বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে আমি আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। আমাদের এক হয়ে কাজ করতে হবে। আমি মনে করি, একসঙ্গে আমরা সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে পারব।” চিনকে ইঙ্গিতে খোঁচা দিয়ে তিনি আরও বলেন, “বিগত কয়েকবছরে অর্থনৈতিক বিপর্যয়, পরিবেশ দূষণ, মহামারী, সন্ত্রাসবাদ ও যুদ্ধ দেখিয়ে দিয়েছে যে বিশ্ব-প্রশাসন ব্যর্থ। আর এর ফল সবথেকে বেশি ভোগ করতে হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে। মানুষের জন্য খাবার ও জ্বালানি জোগাড় করতেই বেশ কয়েকটি উন্নয়নশীল দেশ ঋণের বোঝায় জর্জরিত।”
[আরও পড়ুন: কংগ্রেস নেতার মেয়ের NGOতে বন্ধ বিদেশি অনুদানের লাইসেন্স, তোপ বিরোধীদের]
উল্লেখ্য, চিনা ঋণের ফাঁদে পড়ে নাজেহাল শ্রীলঙ্কা। মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি। ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের অন্তর্গত পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলিতে পরিকাঠামো নির্মাণ করছে চিন (China)। বিপুল ঋণের পসরা সাজিয়ে ফাঁদ পেতেছে দেশটি। বিশ্লেষকদের মতে, বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে অলাভজনক বেশ কয়েকটি প্রকল্প গড়ে তুলেছে ইসলামাবাদ ও কলম্বো। যার পরিণাম এবার হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছে তারা। ঋণ মেটাতে গিয়ে কার্যত দেউলিয়া হয়ছে ওই দুই দেশ। বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার ‘গড়ের মাঠ’ হওয়ায় আমদানি থমকে গিয়ে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে মারাত্মক হারে।