সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিন চারেক আগেই ইউক্রেন সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। চলমান যুদ্ধ নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন সেদেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে। এবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করলেন মোদি। এই ফোনালাপেও কূটনৈতিক আলোচনা ও বৈঠকের মাধ্যমে শান্তির পথে ফেরার বার্তা দিয়েছেন তিনি। এমনটাই জানিয়েছে বিদেশমন্ত্রক।
জুলাই মাসেই রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন মোদি। আলিঙ্গন করেছিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিনকে। যুদ্ধ নিয়ে দিয়েছিলেন বিশেষ বার্তা। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, আজ মঙ্গলবার মোদি ফোন করেছিলেন পুতিনকে। বেশ কিছুক্ষণ কথা হয়েছে তাঁদের মধ্যে। ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে শুরু করে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে দুজনের মধ্যে। এনিয়ে বিদেশমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, 'আজ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ভারত- রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ২২তম সম্মেলন উদযাপন করতে মস্কো গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আজ সেই সফরের নানা মুহূর্ত নিয়ে স্মৃতিচারণা করেন দুজনে। পাশাপাশি দুদেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করতেও আলোচনা করেন তাঁরা। এছাড়া আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মত বিনিময় করেছেন দুজনে। ইউক্রেন সফর নিয়েও প্রধানমন্ত্রী কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে। শান্তির পথে ফিরতে কূটনৈতিক আলোচনা ও বৈঠকের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আগামিদিনে যোগাযোগ বজায় রাখতে সহমত হয়েছেন তাঁরা।'
যুদ্ধক্ষেত্রে কখনও সমাধানের পথ মেলে না। বৈঠক ও কূটনীতির মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন। ভারত এই বিদেশনীতিতেই বিশ্বাসী। আর এই অবস্থান থেকেই ইউক্রেনে গিয়ে জেলেনস্কিকে পরামর্শ দিয়ে মোদি বলেছিলেন, “এই যুদ্ধ থামাতে কূটনৈতিক স্তরে বৈঠক প্রয়োজন। আপনি যদি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসেন তাহলে সাহায্য করবে ভারতও। আমি বন্ধু হিসাবে কথা দিচ্ছি। পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতেও আমি বলেছিলাম, যুদ্ধক্ষেত্রে কখনও কোনও কিছুর সমাধান মেলা সম্ভব নয়। ভারত ইউক্রেনের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে। রাষ্ট্রসংঘের সনদ ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে সব দেশের ক্ষেত্রেই আমাদের এটা মেনে চলা উচিত।” আজও পুতিনকে একই কথাই বলেন নমো।
উল্লেখ্য, পুতিনকে আলিঙ্গন করা নিয়ে নমোকে তোপ দেগেছিলেন জেলেনস্কি। কিন্তু এখন মোদি-ম্যাজিকে মুগ্ধ তিনি। অতীতের তিক্ততা ভুলে যুদ্ধ বন্ধে তাঁর ভরসা মোদিই। বিশ্লেষকদের মতে, মোদির পরামর্শে যদি আলোচনায় বসে ইউক্রেন ও রাশিয়া তাহলে তা বিরাট কুটনৈতিক জয় হবে। পুতিনের সঙ্গে মোদির সখ্যের কথা কারও অজানা নয়। এদিকে, তিক্ততা ভুলে জেলেনস্কির কাছে মোদিই ‘শান্তির দূত’। ফলে ভারসাম্যের খেলা খেলে যদি দিল্লি এই যুদ্ধের বন্ধের পথ খুলে দিতে পারে তাহলে তা বিভিন্ন দেশের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা হবে।