সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনের চিন্তা বাড়িয়ে অরুণাচল প্রদেশে তৈরি সেলা টানেল। শনিবার ইটানগর থেকে কৌশলগত ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সুড়ঙ্গের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, সেলা টানেলে যান চলাচল শুরু হলে তা ভারতীয় ফৌজকে কৌশলগত দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে দেবে।
বিশ্বের দীর্ঘতম দুই লেন বিশিষ্ট টানেল হচ্ছে সেলা। প্রায় ১২ কিলোমিটার লম্বা সুড়ঙ্গটি হয়ে দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যাবে চিন সীমান্ত সংলগ্ন তাওয়াং ও কামেং সেক্টরে। মুহূর্তের নোটিসে লালফৌজকে একহাত নিতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় হাজির হয়ে যাবে ভারতের চতুরঙ্গ বাহিনী। বলে রাখা ভালো, বরাবরই অরুণাচলকে নিজেদের বলে দাবি করে আসছে বেজিং। যা নিয়ে দুদেশের মধ্যে সংঘাত বেড়েছে। লাদাখে থেকে শুরু করে অরুণাচল পর্যন্ত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চোখ রাঙাচ্ছে লালফৌজ। ফলে আবারও গালওয়ানের মতো পরিস্থিতি হতে পারে। তেমনটা হলে দ্রুত এই টানেল দিয়ে পৌঁছে যাবেন জওয়ানরা।
আজ এই টানেলটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সমুদ্রপৃষ্ঠের ১৩,০০০ ফুটের উপরে সুড়ঙ্গটি তৈরি করা হয়েছে। এতদিন তাওয়াং ও কামেং সেক্টরে যাওয়ার যে পাহাড়ি পথ ছিল তা খুবই সংকীর্ণ ছিল। ট্যাঙ্ক ও সাজোয়াঁ যান চলাচল কার্যত ছিল অসম্ভব। ফলে দ্রুত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পৌঁছতে বেশ সমস্যায় পড়তে হত সেনাবাহিনীকে। বিশেষ করে বর্ষাকালে আরও বেহাল দশা হত ওই রাস্তার। কিন্তু এখন আর সেই সমস্যা রইল না। এই দুই লেনের টানেল দিয়ে সহজেই সাজোয়াঁ গাড়ি, অস্ত্রশস্ত্র খুব তাড়াতাড়ি পৌঁছে যাবে সেনা ছাউনিতে। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা কোনও মরশুমেই সমস্যায় পড়তে হবে না ফৌজকে।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেলা টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন মোদি। প্রাথমিকভাবে খরচ ধার্য করা হয়েছিল ৬৯৭ কোটি টাকা। ভারত-চিন সীমান্তে পরিকাঠামো উন্নত করার জন্য দ্রুতগতিতে টানেলের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু মাঝখানে দুবছর করোনা অতিমারির কারণে সেই কাজ ধাক্কা খায়। অবশেষে আজ এই টানেলের পথ খুলে গেল প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে।
এদিকে, শনিবার সকালে অসমের কাজিরাঙা ন্যাশনাল পার্কে যান মোদি। সেখানে হাতির পিঠে সওয়ারি করেন প্রধানমন্ত্রী। কাজিরাঙা থেকে তিনি যাবেন অরুণাচল প্রদেশের ইটানগরে। তার পর উদ্বোধন করবেন সেলা টানেলের। সেখান থেকে তিনি আসবেন শিলিগুড়িতে। লোকসভা নির্বাচনের মুখে উত্তরবঙ্গের প্রথম সভাটি শিলিগুড়ি দিয়ে শুরু করেছেন তিনি। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ সংলগ্ন কাওয়াখালি মাঠে বিকেল তিনটেয় সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী।