সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনের প্রচার পর্বে দেশের মুসলিম সম্প্রদায়কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর মন্তব্যের জেরেই এবার প্রধানমন্ত্রীকে 'অহংকারী' বলে আক্রমণ শানানোর পাশাপাশি মুসলিমদের কাছে তাঁকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুললেন নোবেলজয়ী (Nobel Laureate) অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে মুসলিমদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে দেশবাসীর ব্যক্তিগত সম্পত্তি, মা-বোনেদের গয়না ছিনিয়ে মুসলিমদের মধ্যে বিলিয়ে দেবে। এক্ষেত্রে সংখ্যালঘু বোঝাতে তিনি বলেছিলেন, 'যাঁদের অধিক সন্তান হয়' এবং 'বহিরাগত'। প্রধানমন্ত্রীর মুখে এমন মন্তব্যে দেশজুড়ে শুরু হয় বিতর্ক। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি নরেন্দ্র মোদির বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যম 'দ্য ওয়ার'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অমর্ত্য সেন বলেন, "দেশের ২০ কোটি মুসলিম নাগরিককে অসম্মান করে রেহাই পাবেন না প্রধানমন্ত্রী। তিনি আমাদের সকলকে অসম্মান করেছেন। তাঁর মন্তব্যে তাঁর সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচয় স্পষ্ট। ভারত সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর এমন চিন্তাভাবনা যথেষ্ট উদ্বেগের।
[আরও পড়ুন: তৃতীয় বার ক্ষমতায় এসেই প্রথম ‘মন কি বাত’ মোদির, বৃক্ষরোপণে উৎসাহ দিলেন প্রধানমন্ত্রী]
শুধু তাই নয়, ভোট প্রচার নিজেকে 'ঈশ্বরের দূত' হিসেবে দাবি করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সে প্রসঙ্গে অমর্ত্য বলেন, "হয় তিনি একজন মেগ্যালোম্যানিয়াক। না হয় সম্পূর্ণ ভ্রমে রয়েছেন।" প্রধানমন্ত্রীকে অহংকারী বলে আক্রমণ শানতে নোবেলজয়ী বলেন, "অত্যন্ত অহংকারী দেশের প্রধানমন্ত্রী। যেভাবে উনি নিজেকে জাহির করেন এবং বিরোধীদের অবহেলা করেন তাতে ওনার অহংকার স্পষ্ট। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়েও শরিকদের ভরসায় তাঁকে লোকসভায় বসতে হয়েছে।"
[আরও পড়ুন: ‘চিন্তার কিছু নেই’, শূন্যে বন্দি সুনীতাকে নিয়ে বড় বার্তা ISRO প্রধানের]
লোকসভার ভোটের ফলাফল প্রসঙ্গে নোবেলজয়ী আরও বলেন, 'ভারত যে হিন্দুরাষ্ট্র নয়, ভোটের ফলাফলে সেটাই স্পষ্ট করে দিয়েছে দেশের জনগণ।' রামমন্দির প্রসঙ্গে তিনি জানান, ভারতকে হিন্দুত্বের নিরিখে তুলে ধরতে অনেক খরচ করে রামমন্দির বানানো হয়েছে। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে আর্থিক বৈষম্যের কথাও। তিনি বলেন, 'ধনীদের উপর নির্ভরশীলতা বেশি এবং দরিদ্রদের অবহেলার প্রথা বহু দিন ধরেই এই সরকারে চলছে। যে মন্ত্রিসভা হয়েছে, তা আগের মন্ত্রিসভার মতোই। মন্ত্রীরা সব একই। একটু রদবদল হলেও, রাজনৈতিক ভাবে যাঁরা শক্তিশালী, তাঁরা এখনও শক্তিশালীই।'