সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উগ্র হিন্দুত্ব, বেলাগাম এনকাউন্টারের পাশাপাশি কথায় কথায় বুলডোজার হামলা। উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে (Yogi Adityanath) নিয়ে যতই বিতর্ক থাক না কেন, মোদির চোখে যোগীই সেরা। সোমবার উত্তরপ্রদেশে আলিগড়ে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে বিরোধীদের বুলডোজারের অভিযোগকে ফুঁৎকারে উড়িয়ে নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) বলেন, "কিছু মানুষ আছেন যারা যোগীর পরিচয় করাতে বুলডোজারের উদাহরণ দেয়। আমি ওদের বলব আপনারা চোখ খুলে দেখুন স্বাধীনতার পর উত্তরপ্রদেশে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যত উন্নয়ন হয়েছে তা শুধু যোগীজির কারণে হয়েছে।"
একইসঙ্গে যোগীর প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আপনারা শুধু বুলডোজার বলে চিৎকার করছেন, কিন্তু সত্যিটা হল উন্নয়নকে যদি কেউ শিখরে তুলে থাকেন তবে সেটা যোগী আদিত্যনাথ। 'এক জেলা এক পণ্য' নামে ওনার মিশন আজ গোটা দেশে ওনার সম্মান বাড়াচ্ছে।" এরপরই বলেন, "উত্তরপ্রদেশের সাংসদ হওয়ার সুবাদে আমি গর্ববোধ করি আমার কাছে এমন একজন মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন।" প্রধানমন্ত্রী যখন মুখ্যমন্ত্রীর উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় পঞ্চমুখ তখন অন্যান্য নেতৃত্বের সঙ্গেই তাঁর পাশেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে।
[আরও পড়ুন: কেজরির ইনসুলিনের আর্জি খারিজ, মেডিক্যাল টিম গঠনের নির্দেশ আদালতের]
তবে শুধু যোগীর প্রশংসাতেই থামেননি প্রধানমন্ত্রী। সুর বদলে কড়া আক্রমণ শানান বিরোধীদেরও। বলেন, "ভারতকে দুর্নীতি ও পরিবারবাদের রাজনীতি থেকে মুক্ত করার সময় এসেছে এবং এর জন্য আমাদের বিজেপিকে ভোট দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। আলিগড়ে ভোট ২৬ এপ্রিল এবং হাতরসে ৭ মে।" এদিন মোদির আক্রমণের নিশানায় ছিলেন, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও সপা প্রধান অখিলেশ যাদব। তাদের 'শাহজাদা' কটাক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "গতবার যখন আমি আলিগড়ে এসেছিলাম, আপনাদের সকলের কাছে সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেসের পরিবারবাদ, দুর্নীতি এবং তুষ্টির কারখানায় তালা লাগাতে অনুরোধ করেছিলাম। আপনারা তা এত সুন্দরভাবে করেছেন যে দুই 'শাহজাদা' (রাহুল গান্ধী এবং অখিলেশ যাদব) তালা খোলার চাবি খুঁজে পাচ্ছেন না। আজ আবার আমি এসেছি আপনাদের আশীর্বাদ নিতে।"
[আরও পড়ুন: ভারতের বীরগাথা সিয়াচেন, ইঙ্গিতে পাকিস্তানকে সমঝে চলার হুঁশিয়ারি রাজনাথের]
উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশে অভিযুক্তের বাড়িতে বুলডোজার চালানোর নীতি নতুন কিছু নয়। শাসকের রোষে পড়লেই আইনের ফাঁক গলে চলত বেলাগাম বুলডোজার। পরে আরও একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যও অনুসরণ করে যোগীর নীতি। ফলে জাতীয় রাজনীতিতে বুলডোজার নামেও পরিচিত হয়ে ওঠেন যোগী। এই ইস্যুতে বিতর্ক চরম আকার নিলে আদালতের তরফেও বিষয়টির তীব্র সমালোচনা করা হয়। বুলডোজারের পাশাপাশি যোগী শাসনে উগ্র হিন্দুত্বের উত্তরপ্রদেশে বেলাগাম এনকাউন্টারও নতুন কিছু নয়। যদিও বিরোধীদের অভিযোগকে উড়িয়ে মোদি বুঝিয়ে দিলেন ও বুলডোজার আসলে উন্নয়নের বুলডোজার।