সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লির লালকেল্লা থেকে বাংলাদেশ নিয়ে বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই প্রথমবার পড়শি দেশের অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশ্য কথা বললেন তিনি। জানালেন, বাংলাদেশে থাকা হিন্দু-সংখ্যালঘুদের নিয়ে চিন্তিত ১৪০ কোটি ভারতীয়। মানবজাতির কল্যাণের কথা ভেবে বাংলাদেশের জন্য শুভকামনার বার্তা দিলেন তিনি।
আজ, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ। গত ৫ আগস্ট ব্যাপক গণ আন্দোলনের জেরে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে ছেড়ে তিনি আপাতত ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে সেদেশে হামলার শিকার হচ্ছেন হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুরা। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এদিন মোদি বলেন, "বাংলাদেশে যা কিছু ঘটেছে তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।বাংলাদেশের হিন্দু-সংখ্যালঘুদের নিয়ে চিন্তিত ১৪০ কোটি ভারতীয়। তাঁরা চাইছেন, সেদেশে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার দিকটি নিশ্চিত হোক।"
[আরও পড়ুন: বারবার নির্বাচন থমকে দেয় উন্নয়ন, লালকেল্লায় ফের ‘এক দেশ এক ভোট’ সওয়াল মোদির]
'প্রতিবেশি প্রথম'। এটাই ভারতের বিদেশনীতির অন্যতম বিষয়। এদিন সেকথা মনে করিয়ে দিয়ে মোদি বলেন, "ভারত সবসময় চায় আমাদের প্রতিবেশি দেশগুলো সমৃদ্ধি ও শান্তির পথে হাঁটুক। তাদের শান্তির জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।" বাংলাদেশের এই অস্থির পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হওয়ার আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "বাংলাদেশের 'বিকাশ যাত্রা'র জন্য আমরা শুভকামনা রয়েছে। মানবজাতির কল্যাণের জন্য আমরা চাই সেদেশের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হোক।"
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হওয়ার পরও হিংসার শিকার হয়েছেন হিন্দুরা। আঘাত হানা হয়েছে মন্দিরে। যা নিয়ে সেদেশের নানা জায়গায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হচ্ছে। পথে নেমেছে হিন্দু সম্প্রদায়। হিন্দুদের উপর হামলা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ চেয়েছে রাষ্ট্রসংঘও। উদ্বেগ প্রকাশ আমেরিকা, কানাডার মতো দেশও। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে দিল্লি। এদিকে, হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল বিএনপি। বিশ্লেষকদের মতে, হাসিনার আমলে ঢাকা-দিল্লির মধ্যে যে মজবুত বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তা এখন একটু হলেও চিড় খেয়েছে। তবে দুদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বার্তা দিয়েছে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার। ফলে এদিন, প্রতিবেশি দেশ নিয়ে ভারতের কী অবস্থান তা বুঝিয়ে দিলেন মোদি। কোনও দেশের অভ্যান্তরীণ বিষয়ে নাক গলায় দিল্লি। কিন্তু কোথাও কোনও অস্থিরতা তৈরি সবসময় যে ভারত শান্তির বার্তাই দেয় তাই আরেকবার স্পষ্ট হল প্রধানমন্ত্রীর কথা থেকে।