সুকুমার সরকার, ঢাকা: পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে নিহত বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ওই মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি আবদুল হাামিদও। রাজধানী ঢাকার মিরপুরে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তাঁরা।
আজ ১৪ ডিসেম্বর পাক সেনার হাতে নিহত বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করছে দেশ। এদিন শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি। এরপর তোপধ্বনির মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা শহিদদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। হালকা শীত, কুয়াশা ঢাকা ভোরে নীরবতায় সেই সুরে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে শোকের আবেশ। এরপর দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে আওয়ামি লিগ সভাপতি হিসেবে দ্বিতীয় বার শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী সেখানে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহিদ বুদ্ধিজীবীদের সন্তানদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশি ভক্তদের উচ্ছ্বাসে আপ্লুত, ঢাকায় দূতাবাস খুলতে চায় আর্জেন্টিনা]
শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় স্মরণ করেন দেশের সর্বস্তরের মানুষ। বুধবার ভোর থেকে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল নিয়ে উপস্থিত হতে থাকেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন-সহ নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষ। সকাল ৮টায় ঢাকার রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধের শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এই সময় উপস্থিত ছিলেন দলটির নেতাকর্মীরা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “একাত্তরের পরাজিত শক্তি আবারও প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, “জাতিকে মেধাশূন্য করতেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা শিক্ষক, সাংবাদিক, ডাক্তার, আইনজীবী, সংস্কৃতিকর্মী-সহ মেধাবীদের হত্যা করে।”
১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন বাংলাদেশের (Bangladesh) মুক্তিযোদ্ধারা। সঙ্গে ছিল ভারতের মিত্রবাহিনী। ২৬ মার্চে যুদ্ধ শুরু হওয়ার একেবারে শেষ দিকে ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রাজাকার, আল বদর, আলসামশ-সহ ঘাতকবাহিনী তৈরি করে বাংলাদেশের শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল বাঙালি জাতিকে মেধা শূন্য করা। দেশের নানা জায়গায় হত্যাযজ্ঞ চললেও মূল হত্যাযজ্ঞ চলে রাজধানী ঢাকার রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে। সেই থেকে ১৪ ডিসেম্বর দিনটিকে জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে, পালন করে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে।