সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে ফেনির মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দ্রুত বিচার চেয়ে আমৃত্যু অনশনে বসার ঘোষণা করলেন প্রখ্যাত কবি নির্মলেন্দু গুণ। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৩৭ মিনিটে নিজের ফেসবুকে এই ঘোষণা করেছেন তিনি। কবি লিখেছেন, ‘রাফির ধর্ষক সিরাজ এবং তাকে বাঁচাতে রাফিকে যারা পুড়িয়ে মেরেছে, তাদের কঠিন বিচার করতে হবে দ্রুতই। নাহলে আমি আমৃত্যু অনশনে বসব।’ দ্রুততার স্বার্থে ট্রাইব্যুনালে বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করার জোরদার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। শুক্রবার ঢাকার রাজপথে একযোগে এই কর্মসূচিতে শামিল হয়েছে ইসলামি ছাত্রসেনার ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ মাইনরিটি সংগ্রাম পরিষদ-সহ বিভিন্ন সংগঠন। উঠল স্লোগান – ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’, ‘নিরাপদ নোয়াখালি চাই৷’
[ আরও পড়ুন: শ্লীলতাহানির মামলা দায়ের, ‘অপরাধে’ অগ্নিদগ্ধ ছাত্রীর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ হাসিনার]
বৃহত্তর নোয়াখালি সমিতি ঢাকার সিনিয়র সেক্রেটারি জেনারেল মনোয়ার হোসেন তৌফিক বলেন, ‘সরকার চাইলেই নুসরতের হত্যাকারীদের বিচার করা সম্ভব। আমি সরকারকে অনুরোধ করছি, এর বিচার করুন। নাহলে নোয়াখালিবাসী আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে এই বিচার নিশ্চিত করতে বাধ্য করবে।’ বিভিন্ন মহল নুসরতের হ্ত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে৷ তবে এসবের মধ্যে কবি নির্মলেন্দু গুণের প্রতিবাদ সরকারের মাথাব্যথার একটা কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেই মনে করছে অভিজ্ঞ মহলের একাংশ৷
[আরও পড়ুন: ঢাকার তরুণীকে কলকাতায় আটকে রেখে দেহ ব্যবসার অভিযোগ, আটক দম্পতি]
সোনাগাজির ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিমের পরীক্ষার্থী নুসরতকে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা লাগাতার ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ তুলে তাঁর বিরুদ্ধে নুসরতের মা শিরিন আখতার সোনাগাজি থানায় মামলা করেন। অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সূত্রের খবর, মামলা তুলে নিতে অধ্যক্ষের পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে নুসরতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তাতে রাজি হননি নুরসত এবং তার পরিবারের কেউ৷ তারপরপরই পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে নুসরতকে ডেকে কৌশলে একটি বহুতল ভবনে নিয়ে গিয়ে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়৷ ৫ দিন পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে মারা যান নুসরত। বৃহস্পতিবার গ্রামের বাড়িতে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
এদিকে, নুসরত জাহান রাফির মৃত্যুর ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ধর্ষণে অভিযুক্ত হিসেবে নাম উঠল ফেনিরই এক প্রধান শিক্ষকের৷ পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার খবর জানাজানি হতেই গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে আসে৷ ফেনির খুশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। এখানকার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বছর পঞ্চান্নর প্রধান শিক্ষক আবদুল করিমের বিরুদ্ধে৷ বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন অভিযুক্ত। জবানবন্দিতে একই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন আবদুল করিম। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রধান শিক্ষকের ধর্ষণের শিকার হয় খুশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী। ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছে পরিবার৷
The post মাদ্রাসা ছাত্রীর ঘাতকদের দ্রুত বিচারের দাবি, আমৃত্যু অনশনের ঘোষণা কবির appeared first on Sangbad Pratidin.