রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রচারে বেরিয়ে বিতর্কে কাঁথির বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারী। তাঁর মিছিল থেকে পুলিশের গাড়িতে হামলার অভিযোগ। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী। রবিবারের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি ২ নম্বর ব্লকের শ্যামপুরে ব্যাপক উত্তেজনা। অযথা পুলিশি হেনস্তার প্রতিবাদে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলেই পালটা দাবি বিজেপির।
জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যার মুখে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারীর কর্মসূচি ছিল। তাই বিজেপি কর্মীরা মিছিল করে যাচ্ছিলেন। খেজুরি ২ নম্বর ব্লকের শ্যামপুরের কাছে মিছিলের পাশ দিয়ে পুলিশের গাড়ি যাচ্ছিল। সেই সময় বিজেপি কর্মীরা আচমকা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। বিজেপির অভিযোগ, মিথ্যে মামলায় বিজেপি কর্মীদের ফাঁসানো হচ্ছে। শাসকদলের অঙ্গুলিহেলনে নানা রকমভাবে হেনস্তা করছে পুলিশ। সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এদিন।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা জনকা অঞ্চল সভাপতি অসীম মণ্ডল বলেন, বিজেপির লোকজন পরিকল্পনা করেই এই হামলা চালিয়েছে। আসলে উত্তম বারিক কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ায় বিজেপি হারের আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছে। সেই হতাশা থেকে হামলা চালানো হয়েছে। আমরা পুলিসকে ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছি। এসডিপিও দিবাকর দাস বলেন, “একটি রাজনৈতিক দলের মিছিল চলছিল। সেইসময় পুলিশ গাড়ি যাচ্ছিল। তখনই আচমকা ভাঙচুর চালানো হয়। যে বা যারা এই ঘটনায় যুক্ত তাদের সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
[আরও পড়ুন: প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ! বারাকপুরের টিকিট না পেয়ে ‘বিদ্রোহী’ অর্জুন ফিরছেন পদ্ম ব্রিগেডে?]
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলবদল করেন শুভেন্দু অধিকারী। অমিত শাহর সামনে যোগ দেন বিজেপিতে। বর্তমানে নন্দীগ্রাম বিধানসভার বিধায়ক তিনি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। বলা চলে শুভেন্দুর দলবদলের পর থেকেই অধিকারী পরিবারে উলটো স্রোত। সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে শিশির অধিকারী এবং দিব্যেন্দুকে। তাই অধিকারী পরিবারের কেউ যে ভোটের টিকিট পাচ্ছেন না, তা এককথায় নিশ্চিতই ছিল। আর রবিবাসরীয় ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে ৪২ আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর সেই গুঞ্জনেই সিলমোহর। তমলুক লোকসভা আসনে শিশিরের পরিবর্তে দেবাংশু ভট্টাচার্যতেই আস্থা রেখেছে ঘাসফুল শিবির। দিব্যেন্দুর লোকসভা কেন্দ্র কাঁথিতে তৃণমূলের চব্বিশের সৈনিক উত্তম বারিক। সুতরাং, এই প্রথমবার লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে ভোটে লড়ছেন না অধিকারী পরিবারের কেউ।