সুব্রত বিশ্বাস: শুল্ক বিভাগের আধিকারিক পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৩০০ গ্রাম সোনার বিস্কুট কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। গত ৯ মার্চ বনগাঁ লোকাল থেকে দমদমে এক ব্যক্তিকে নামানো হয়। শুল্ক আধিকারিক পরিচয় দিয়ে দলের আট সদস্য তাঁকে ট্যাক্সিতে তুলে নিয়ে যায়। তাঁর কাছ থেকে সব সোনা কেড়ে চিংড়িঘাটার কাছে ট্যাক্সি থেকে তাঁকে জোর করে নামিয়ে দেওয়া হয়। এরপর পুরো দলটি চম্পট দেয়।
এ নিয়ে গত ১১ মার্চ দমদম রেল পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেন বনগাঁর বাসিন্দা বিশ্বজিৎ বর্মন। ১৫ লক্ষ টাকার সোনা গায়েবের তদন্ত শুরু করে দমদম রেল পুলিশ। দমদম স্টেশনের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে বিভিন্ন থানার সঙ্গে ‘রেকর্ড কনসাল্ট’ করা শুরু করে রেল পুলিশের তদন্তকারী দলটি। সূত্রের খবর, এরপর সোনা কেড়ে নেওয়া দলটিকে শনাক্ত করা হয়। আটজনই বেলঘরিয়া থানার পুলিশ কর্মী বলে জানা যায়। যাদের মধ্যে পিসি পার্টির দুই এসআই, তিনজন কনস্টেবল, দু’জন অস্থায়ী হোমগার্ড ও একজন সিভিক ভলেন্টিয়ার।
[আরও পড়ুন: রামপুরহাট কাণ্ড: ‘আমি ব্যথিত, আপনার মন্তব্য তদন্তেও প্রভাব ফেলতে পারে’, রাজ্যপালকে জবাব মমতার]
সোমবারই এই ফুটেজ-সহ বিস্তারিত রিপোর্ট বেলঘরিয়া থানা ও পুলিশ কমিশনারেটের কাছে পাঠিয়েছে রেল পুলিশ। বেলঘরিয়া থানার ওসি রতন চক্রবর্তী অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁর কাছে বিষয়টি এখনও অজানা। তবে তথ্যাভিজ্ঞ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রত্যেককে শনাক্ত করার পর বিভাগীয় ভাবে তাদের ক্লোজ করা হয়েছে। রেল পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন। ফলে বিস্তারিত জানানো সম্ভব নয়। তবে সিসিটিভির ফুটেজের মাধ্যমে দেখা গিয়েছে এরা প্রত্যেকেই বেলঘরিয়া থানার পুলিশ। সোমবার রেল পুলিশ অভিযুক্তদের শনাক্ত করলেও অভিযোগকারী বিশ্বজিৎ বর্মনকে এনে টিআই প্যারেড করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
গত ৯ মার্চ দুপুরে বিশ্বজিৎ বর্মনকে বনগাঁ লোকাল থেকে শুল্ক আধিকারিক পরিচয় দিয়ে নামিয়ে নিয়ে যায় দলটি। এরপর ট্যাক্সিতে তুলে সোনা কেড়ে ট্যাক্সি থেকে নামিয়ে দেয় দলটি। এরপর উধাও হয়ে যায় ট্যাক্সিটি। ট্যাক্সির হদিশ পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। বিশ্বজিৎবাবু সোনার ব্যবসায়ী না হলেও তিনি দাবি করেছেন, বাড়ির সোনার অলঙ্কার গলিয়ে তা বিস্কুটে পরিণত করে কলকাতায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। এই সময়ই ঘটে গিয়েছে এই বিপত্তি।
ট্রেনে সোনা নিয়ে যাওয়া নতুন বিষয় নয়। কলকাতার সোনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক শ্রেণির লোকের সখ্য রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ট্রেনে সোনা যাতায়াতের পথ পরিষ্কার রাখতে সোনা ব্যবসায়ীদের একাংশ আগাম পুলিশকে খবর দিয়ে রাখে। সেই খবর ভিন্ন সূত্রে অন্যত্র পাচারও হয় বহু সময়ে বলে তথ্যাভিজ্ঞ মহল সূত্রে খবর। তেমন সূত্রেই খবর পেয়ে পুলিশের এই দুষ্কর্ম।