অর্ণব আইচ: দেহ উদ্ধারের পর কেটেছে মাত্র আটচল্লিশ ঘণ্টা৷ তারই মধ্যে যোধপুর পার্কের বৃদ্ধা খুনের কিনারা করল লেক থানার পুলিশ৷ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ওই ফ্ল্যাটের মালি এবং নিরাপত্তারক্ষীকে গ্রেপ্তার করেছেন তদন্তকারীরা৷ খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছে দু’জনেই৷ সম্পত্তির লোভে বৃদ্ধার এক অত্যন্ত পরিচিতের নির্দেশেই তারা ওই বৃদ্ধাকে খুন করেছে বলেই জেরায় জানিয়েছে অভিযুক্তরা৷
[ আরও পড়ুন: যোধপুর পার্কে বৃদ্ধা খুনের ঘটনায় জড়িত পরিচিতরাই, দাবি পুলিশের]
১৪১, যোধপুর পার্কের চারতলা ফ্ল্যাটের তিনতলায় একাই থাকতেন বৃদ্ধা শ্যামলী ঘোষ। শক্তসমর্থ ওই বৃদ্ধার কোনও পরিচারিকা ছিল না৷ বাড়ির কাজ নিজেই করতেন তিনি৷ বাড়িতে আসাযাওয়া ছিল ওই ফ্ল্যাটেরই মালি এবং নিরাপত্তারক্ষীর৷ আচমকাই গত বৃহস্পতিবার তাঁর ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ পাওয়া যায়৷ তাঁর ঘরের সঙ্গে যুক্ত শৌচালয়ের পাশ থেকে দেহ উদ্ধার করা হয়৷ গলায় কাপড় জড়ানো এবং মুখে বালিশ ছিল তাঁর৷ ওই বৃদ্ধার মাথার পিছনের আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়৷ এছাড়াও তাঁর দেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয় একটি সাঁড়াশি৷ তদন্তে নামে লেক থানার পুলিশ৷ এই ঘটনার সঙ্গে বৃদ্ধার পরিচিতরা জড়িত রয়েছে বলেই প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করেন আধিকারিকরা৷
[ আরও পড়ুন: শহরে ফের মাদক উদ্ধার, গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক]
ওই ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে একটি ডায়েরি উদ্ধার করে পুলিশ৷ নিয়মিত ডায়েরি লেখার অভ্যাস ছিল নিহত বৃদ্ধার৷ পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ডায়েরিতে নিজের প্রাণহানির আশঙ্কার কথা লিখে রেখেছিলেন বৃদ্ধা৷ তাঁর পরিচিত বেশ কয়েকজনই যে তাঁকে খুনের চেষ্টা করছেন, তাও উল্লেখ ছিল ছত্রে ছত্রে৷ ফ্ল্যাটের মালি, নিরাপত্তারক্ষী-সহ বেশ কয়েকজনের নামও উল্লেখ করে গিয়েছিলেন বৃদ্ধা৷ ডায়েরি থেকে পাওয়া সূত্রের ভিত্তিতেই পুলিশ ফ্ল্যাটের মালিকে আটক করে৷ দীর্ঘক্ষণ জেরায় খুনের কথা স্বীকার করে নেয় সে৷
[ আরও পড়ুন: ভোটের মুখে রদবদল, সরানো হল কলকাতা এবং বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারকে]
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ধৃত জানায় মঙ্গলবার সকালে ফুল দেওয়ার নাম করে বৃদ্ধার ঘরের দরজায় ধাক্কা দেয়৷ দরজা খোলামাত্রই প্রায় জোর করে বৃদ্ধার ঘরে ঢুকে পড়ে৷ সেই সময় তার সঙ্গে ছিল ওই ফ্ল্যাটের নিরাপত্তারক্ষীও৷ কিছুক্ষণ বাদানুবাদের পর সাঁড়াশি দিয়ে বৃদ্ধার মাথায় আঘাত করে মালি৷ তাতে সংজ্ঞা হারান বৃদ্ধা৷ মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে এবং মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে দেওয়া হয় শ্যামলী দেবীর৷ খুনের পর বেশ কিছুক্ষণ ওই ঘরেই বসেছিলেন দু’জনে৷ বৃদ্ধা মারা গিয়েছেন নিশ্চিত হওয়ার পরই ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যায় তারা৷ খুনের কথা স্বীকার করলেও, এই ঘটনার সঙ্গে আরও একজনের যোগ রয়েছে বলেও জানায় মালি এবং নিরাপত্তারক্ষী৷ ওই তৃতীয় ব্যক্তির পরিকল্পনাতেই তারা খুন করেছে বলেই স্বীকার করেছে৷ আপাতত বৃদ্ধা খুনের ঘটনার মূলচক্রীকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন পুলিশ আধিকারিকরা৷
The post ডায়েরির সূত্র ধরে যোধপুর পার্কের বৃদ্ধা খুনের কিনারা, গ্রেপ্তার ২ appeared first on Sangbad Pratidin.