জ্যোতি চক্রবর্তী, বসিরহাট: বাজিতপুরে ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার বিএসএফ জওয়ান-সহ ২জন। ধৃতেরা হল পলাশ মজুমদার এবং কৌশিক দাস। ধৃত পলাশ, বাগদার গাদপুকুরিয়ার বাসিন্দা। সে বিএসএফ জওয়ান হিসাবেই পরিচিত। অপর অভিযুক্ত কৌশিক দাস বাগদার নাতাবেড়িয়ার বাসিন্দা। কী কারণে তারা ব্যবসায়ীকে খুন করল, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে বাজিতপুর এলাকায় ইছামতী নদীর পাশের একটি মাচা থেকে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস নামে ওই ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার হয়৷ পুলিশ জানায়, রবীন্দ্রনাথ ইছামতীতে নৌকায় করে মাছ ধরা দেখছিলেন। অভিযোগ, বাজিতপুর সেতুর উপর থেকে দুই যুবক প্রস্রাব করে৷ তা গিয়ে লাগে রবীন্দ্রনাথের গায়ে। এরপরে রবীন্দ্রনাথ উপরে উঠে আসেন। ঘটনার প্রতিবাদ করেন। যুবকদের সঙ্গে তাঁর তর্কাতর্কি বেঁধে যায়। শুরু হয় হাতাহাতি। তাতেই মৃত্যু হয় রবীন্দ্রনাথের। এই ঘটনায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ‘জঙ্গি, টাকা তুলে বিরিয়ানি খাবে?’ উত্তরপ্রদেশে ৩ ফকিরকে বেধড়ক মার, ভাইরাল ভিডিও]
মঙ্গলবার রাতে রবীন্দ্রনাথের দেহ নিয়ে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, পুলিশ প্রকৃত দোষীদের আড়াল করছে। নাটাবেড়িয়া ফাঁড়ির পুলিশ অবরোধ তুলতে যায়। উত্তেজিত জনতা পুলিশের উপর হামলা চালায়। ফাঁড়ির ইনচার্জ আসাদুর রহমান মণ্ডল একটি মিষ্টির দোকানে আশ্রয় নেন। পরে বাগদার এসডিপিও সুকান্ত হাজরার নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিচার্জ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে৷ গ্রামবাসী ও পালটা ইট ছুঁড়তে থাকে। ইটের ঘায়ে এসডিপিও-সহ ৪ জন জখম হন। পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃত প্রসেনজিৎ বিশ্বাস, মহাদেব কর্মকার, সাধন ঘোষ ও রবীন কর্মকার বাজিতপুরের বাসিন্দা। ধৃতদের বুধবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হয়। ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
বুধবার মৃতের স্ত্রী মানালি বিশ্বাস কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমার স্বামীর খুনিদের পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না৷ পুলিশ কেন আসামিদের গ্রেপ্তার করছে না? যদি নাই করে তাহলে আইন নিজের হাতে তুলে নেব।” আপাতত এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে একজন বিএসএফ জওয়ান হওয়ায় ঘটনার গুরুত্ব যে আরও বেড়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।