স্টাফ রিপোর্টার: পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের ব্যানারে বিজেপির ছদ্মনামে নবান্ন অভিযানের দিন অশান্তি বাঁধানোর ছক আরও স্পষ্ট হল। নিজেদের ‘ছাত্র’ বলে পরিচয় দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজের তরফে শুক্রবার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কর্মসূচির কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন তিনজন। ২৭ তারিখ বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতাদের পতাকা ছাড়াও পরিবারের একজনকে সঙ্গে নিয়ে নবান্ন অভিযানের মিছিলে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে এই সাংবাদিক সম্মেলনে। শুধু তাই নয়, হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, ওই দিন মিছিলকে যদি পুলিশ বা শাসকদল বাধা দেয় তাহলে বাংলা স্তব্ধ হবে।
এদিকে আগামী ২৭ তারিখ ছাত্রদের নবান্ন (Nabanna) অভিযানকে সমর্থন করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস (PCC)সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেন, “ছাত্রদের যে নবান্ন অভিযান তাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। তাদের দৃঢ়তা আছে আমরা তাদের সঙ্গে আছি। দরকার হলে আমরা সেই নবান্ন অভিযানে যাব। সঠিক সিদ্ধান্ত ছাত্রদের।” ফলে ওইদিন গোলমালের আগাম ইঙ্গিত এদিন দিয়ে রেখেছেন ছাত্রসমাজের তরফে উপস্থিত সায়ন লাহিড়ী, প্রবীর দাস ও শুভঙ্কর হালদার। প্রবীর নিজেকে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, শুভঙ্কর কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলে পরিচয় দেয়। তাঁরা একে অপরের 'ফেসবুক ফ্রেন্ড' বলে পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু শুধু সমাজমাধ্যমে (Social Media) প্রচার করে এত বড় কর্মসূচি, এই জঙ্গি আন্দোলনের পিছনে কারা রয়েছে, সেই বিষয়টি অবশ্য সুকৌশলেই এদিন এড়িয়ে গিয়েছে ছাত্রসমাজের তরফে দাবি করা এই তিনজন।
কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক ছাত্রদের। নিজস্ব ছবি।
[আরও পড়ুন: ছেলে নিরীহ, ওকে কেউ ফাঁসিয়ে থাকলে তাকেও ধরা হোক’, দাবি সঞ্জয়ের মায়ের]
গোয়েন্দা পুলিশের শীর্ষস্তরের এক সূত্র জানাচ্ছে, আর জি কর (RG Kar) ইস্যুতে আগামী ২৭ আগস্ট ছাত্র সমাজের নাম করে ডাকা নবান্ন অভিযানের দিন বড়সড় অশান্তি পাকানোর ছক করা হয়েছে। ঘষেমেজে এই পরিকল্পনাকে নিখুঁত রূপ দিতে মাঠে নেমেছে বিরোধী পক্ষ। ছাত্র সমাজের নামে এই আন্দোলনের পিছনে রয়েছে, বিজেপি (BJP) তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। বামেদের একাংশও যোগ দিতে পারে গেরুয়া শিবিরের এই কর্মসূচিতে। বামেদের বিভিন্ন ফেসবুক পেজ থেকে শুরু করে এবিভিপি ও আরএসএসের ছদ্মনামের প্রোফাইল থেকে পোস্ট করা হচ্ছে এই কর্মসূচির। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) নিজেও প্রচার করছেন। শুভেন্দু নিজেও এই কর্মসূচিতে থাকবেন।
[আরও পড়ুন: মহিলা তৃণমূল কর্মীর উপর ‘অত্যাচার’, নন্দীগ্রামে গ্রেপ্তার ২ বিজেপি কর্মী]
আগামী ২৯ আগস্ট এই ইস্যুতেই কলেজ স্ট্রিট থেকে শ্যামবাজার প্রতিবাদ মিছিল করবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। আর জি করের নির্যাতিতার বিচার ছেড়ে এখন মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে নবান্ন অভিযানের নামে ২৭ আগস্ট পথে নেমে রাম-বাম যৌথভাবে অশান্তি ও হিংসা ছড়ানোর চক্রান্ত করছে বলে ইতিমধ্যে অভিযোগ করেছে তৃণমূল (TMC)। কারণ, শুভেন্দু হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ২৬ তারিখ পদত্যাগ করুন, যাতে গুলি না চালাতে হয়।’’ সূত্রের খবর, এই নবান্ন অভিযানের রাশ থাকছে বিজেপির ছাত্র ও যুব সংগঠনের হাতে। ফলে শেষমেশ এই কর্মসূচি থেকে এড়িয়ে থাকার দাবি করছে বাম-সহ অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলি। ২৭ তারিখ দুপুর ১টায় কলেজ স্কোয়ার ও সাঁতরাগাছিতে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়। বিজেপির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা এবং হাওড়া-হুগলি জেলার যুব মোর্চা ও এবিভিপির (ABVP) কর্মীরা সাঁতরাগাছিতে জমায়েত করবেন। অন্যদিকে, কলেজ স্কোয়ারের জমায়েতে দুই কলকাতা ও শহরতলি থেকে গেরুয়া ছাত্র-যুব কর্মীরা আসবেন।