দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: ‘আরামবাগ টিভি’র (Arambagh TV) সম্পাদককে গ্রেপ্তারির পর থেকে তোলপাড় বিভিন্ন মহল। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সর্বত্র চলছে জোর আলোচনা। তবে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার যে কোনও কারণ নেই, সাংবাদিক বৈঠক করে সেকথাই পরোক্ষে জানিয়ে দিলেন হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশ সুপার তথাগত বসু। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই সফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেই জানান তিনি।
এদিন পুলিশ সুপার জানান, সফিকুল একটি বেআইনি তিনতলা বাড়ির মালিক। তাঁর বাড়ির সামনের রাস্তা কৃষকদের কাছ থেকে জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রতারিতরা নির্দিষ্ট অভিযোগও দায়ের করেছেন। তথাগতবাবু আরও জানান, সস্ত্রীক সফিকুল ‘আরামবাগ টিভি’র পাশাপাশি বেশ কয়েকটি সাপ্তাহিক সংবাদপত্রও চালাতেন। যার কোনটারই আরএনআই করা নেই। এমনকী স্থানীয় প্রশাসনিক অনুমতিটুকু পর্যন্ত নেই। শুধু তাই নয় বিতর্কিত খবর ছাপিয়ে তোলাবাজিরও অভিযোগ উঠেছে সফিকুলের বিরুদ্ধে। বেশ কিছু সংগঠনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়। এদিন হুগলির গ্রামীণ পুলিশ সুপার তথাগত বসু সাংবাদিক বৈঠকে পরিষ্কার করে জানিয়ে দেন, প্রতারিতদের নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সুপার আরও জানান, এর আগেও ২০১৩, ২০১৫ ও ২০১৭ সালে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সফিকুল।
[আরও পড়ুন: অতীতের সব রেকর্ড ভাঙল সংক্রমণ, রাজ্যে একদিনে করোনা আক্রান্ত ৭৪৩ জন]
গত ২৮ জুন রাতে ‘আরামবাগ টিভি’র সম্পাদক সফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় সফিকুলের স্ত্রী আলিমা বিবি এবং ‘আরামবাগ টিভি’র আরেক সাংবাদিক সুরজ আলি খানকে। তাঁদের বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশনের নামে তোলাবাজির অভিযোগ ছিল। রবিবার সফিকুল এবং সুরজের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের হয়। যাতে অভিযোগ ছিল, সরকারি গাছ কাটা নিয়ে সুরজ এক ব্যক্তিকে হুমকি দিয়েছেন। অভিযোগকারীর দাবি, সুরজ তাঁর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকার ‘তোলা’ চেয়েছেন। না দিলে গাছ কাটা নিয়ে দুর্নীতির ‘ভুয়ো’ খবর ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। সেই মামলার ভিত্তিতেই ওই সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়।
যদিও ‘আরামবাগ টিভি’র আধিকারিকদের দাবি, সফিকুল এবং সুরজের উপর পুরনো রাগ পুলিশের। এপ্রিল মাসে ‘আরামবাগ টিভি’তে একটি খবর সম্প্রচারিত হয়। যাতে দেখানো হয়, লকডাউনের মধ্যেও থানা থেকে স্থানীয় কতগুলি ক্লাবকে আর্থিক সাহায্যের চেক বিলি করা হচ্ছে। সেই খবরে দাবি করা হয়, তথাকথিত এই ‘ক্লাব’গুলির অস্তিত্ব নেই। শাসকদলের নেতামন্ত্রীদের টাকা পাইয়ে দিতেই এভাবে ক্লাবের নামে থানা থেকে চেক বিলি করা হচ্ছে। তখনই সফিকুলের বিরুদ্ধে ‘ভুয়ো’ খবর সম্প্রচারের মামলা দায়ের করা হয়েছিল। যদিও আদালত তাঁর গ্রেপ্তারিতে স্থগিতাদেশ দিয়ে দেয়। সেই মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে সফিকুলের দাবি, তখন থেকেই তাঁকে জেলে ঢোকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: লকডাউনে চিকিৎসায় মগ্ন, সাংসদ কাকলি ও বিধায়ক স্বামীর হাত ধরে জন্ম IVF শিশুদের]
The post সুনির্দিষ্ট অভিযোগেই ধৃত ‘আরামবাগ টিভি’র সম্পাদক, বিতর্কের জবাব পুলিশ সুপারের appeared first on Sangbad Pratidin.