অর্ণব আইচ ও সুরজিৎ দেব: গড়িয়াহাটের (Gariahat) কাঁকুলিয়া রোডে শিল্পকর্তা সুবীর চাকি এবং তাঁর গাড়িচালককে খুনের জট এখনও কাটেনি। কে বা কারা হত্যাকারী, তা নিয়ে ধন্দে তদন্তকারীরা। এই ঘটনায় এবার পুলিশের নজরে শিল্পকর্তার প্রাক্তন পরিচারিকা। মিঠু হালদার নামে ওই মহিলা ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দা। মঙ্গলবার আটক করে জেরা করা হয় তাঁকে। নিহত শিল্পকর্তার বাড়ি দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন মিঠু। এর আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে স্বামীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় ওই মহিলাকে।
৭৮ এ কাঁকুলিয়া রোডের অভিজাত এলাকার এক সময়ের বাসিন্দা ছিলেন ওই শিল্পকর্তা। বর্তমানে স্ত্রী এবং মাকে নিয়ে নিউটাউনের একটি অভিজাত এলাকায় বাস করতেন। কাঁকুলিয়া রোডের বাড়িটি বিক্রির চেষ্টা করছিলেন। গত রবিবার সন্ধেয় ক্রেতাকে বাড়ি দেখানোর জন্য গাড়িচালককে সঙ্গে নিয়ে কাঁকুলিয়া রোডে যান তিনি। রবিবার সন্ধের পর থেকে সুবীরবাবুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাঁর ফোনটি সুইচড অফ ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যে কাঁকুলিয়া রোডের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় শিল্পকর্তা এবং তাঁর গাড়িচালক রবীন মণ্ডলের রক্তাক্ত দেহ। দু’জনেরই হাত, পা, ঘাড়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
[আরও পড়ুন: নাম বদলে যাচ্ছে ফেসবুকের! আগামী সপ্তাহেই নতুন পরিচয় পেতে পারে জুকারবার্গের সংস্থা]
কাঁকুলিয়া রোডে জোড়া খুনের ঘটনায় শুরু হয় তদন্ত। কলকাতা পুলিশের ডগ স্কোয়াডে থাকা জার্মান শেফার্ড ‘জিপসি’কে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই বাড়িটির দোতলা ও তিনতলার ঘটনাস্থল শুঁকে আশপাশে ঘোরাঘুরি করে ‘জিপসি’। খুনির সন্ধানে নেমে কাঁকুলিয়া রোড থেকে আধ কিলোমিটারের উপর দৌড়ে বালিগঞ্জ স্টেশনে পৌঁছয় কলকাতা পুলিশের সারমেয় বাহিনীর এই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সঙ্গে তার হ্যান্ডলার মোহন মণ্ডল। স্টেশনের সিঁড়ি দিয়ে নেমে বালিগঞ্জ স্টেশনের এক ও দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝখানে একটি জায়গায় বসে পড়ে ‘জিপসি’।
পুলিশ কুকুরের এই ‘তদন্তের’ পর লালবাজারের গোয়েন্দাদের ধারণা, খুনিরা ট্রেনে করেই পালিয়েছে। বালিগঞ্জ স্টেশন থেকে শিয়ালদহ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গা ও বজবজের দিকে যাওয়া যায়। পুলিশের ধারণা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোনও জায়গায় পালিয়েছে খুনিরা। এদিকে, গোয়েন্দাদের তদন্তেও এমনই তথ্য উঠে এসেছে। খুনিদের সন্ধানে বালিগঞ্জ স্টেশন, ফার্ন রোড ও বিজন সেতু লাগোয়া রাস্তার সিসিটিভির ফুটেজ গোয়েন্দারা পরীক্ষা করছেন।