স্টাফ রিপোর্টার: র্যাগিংয়ের অংশ হিসেবে করা হয়েছিল যৌন নির্যাতন। আত্মহত্যার প্ররোচনা দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দাদারাই। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার চার্জশিটে এমন তথ্যই দিল লালবাজার (Lalbazar)। চার্জশিটে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৫ ধারায় নাবালককে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ সহ-অ্যান্টি র্যাগিং ও পকসো ধারা লাগু করা হয়েছে।
গত ৯ আগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) হস্টেলের এ ব্লকের তিনতলা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় বাংলা বিভাগের প্রথমবর্ষের পড়ুয়ার। নাবালক ওই ছাত্র নদিয়ার বগুলার বাসিন্দা ছিল। ঘটনার সময় তাঁর পরনে কোনও বস্ত্র ছিল না। ছেলের মৃত্যুর পর থানায় খুনের মামলা দায়ের করেছিলেন মৃতের বাবা। তদন্তে নেমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ও বর্তমান পড়ুয়া মিলিয়ে মোট ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার দিন ছাত্রের উপর যৌন নির্যাতনও করা হয়েছিল। পরে ধৃতদের বিরুদ্ধে পকসো ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। ঘটনার তদন্তভার নেয় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। জেলে গিয়ে অভিযুক্তকদের জেরা করেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
[আরও পড়ুন: মহেশতলা পুরসভার গাফিলতিতে ২ কিশোরের মৃত্যু? দুর্ঘটনা ঘিরে রণক্ষেত্র বজবজ ট্রাঙ্ক রোড]
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, সেদিন সন্ধে থেকে ছাত্রটির উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছিল। জামা কাপড় খুলে নেওয়া হয়েছিল। একটা সময় এমন হয় যে সে একটি ঘরে ঢুকে পড়েছিল। কিন্তু অভিযুক্তরা তাকে নির্মমভাবে টেনে নিয়ে এসে অত্যাচার চালাতে থাকে। সকলে মিলে তাকে ঘিরে ধরে। পালিয়ে বাঁচার কোনও পথ খুঁজে পাচ্ছিল না। তার কাছে তখন আত্মহত্যাই একমাত্র পথ ছিল। তখন সে নিচে ঝাঁপ দেয়। ঘটনার ৭০ দিনের মাথায় পকসো কোর্টে চার্জশিট দাখিল করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তর। ঘটনার দিন ছাত্রটিকে যে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছিল তা চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে। চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে, প্রথমদিন থেকে ছাত্রটি হস্টেলে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছিল। ঘটনার দিন ছাত্রটিকে দীর্ঘক্ষণ ধরে শারিরীক ও মানসিক অত্যাচার করা হয়েছিল। যৌন নির্যাতনও করা হয়েছিল। অত্যাচারের মাত্রা এতটাই বেশ ছিল যে, ছাত্রটি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল।