বাবুল হক, মালদহ: বাবা, মা, বোন এবং দিদাকে খুনের ঘটনা হার মানাবে বলিউড ছবির চিত্রনাট্যকেও। মালদহের (Maldah) কালিয়াচকের আট মাইল এলাকার ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে চারজনের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। দেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঠিক কীভাবে পরিবারের চারজনকে খুন করল, তা নিজে মুখেই স্বীকার করেছে অভিযুক্ত আসিফ মহম্মদ।
মালদহের পুলিশ সুপার জানান, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে তিনটা নাগাদ ঠান্ডা পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বাবা, মা, দাদা, বোন এবং দিদাকে খাওয়ায় আসিফ। অচৈতন্য হয়ে পড়েন প্রত্যেকে। তারপরই তাঁদের মুখে সেলোটেপ লাগিয়ে দেয় সে। বেঁধে দেওয়া হয় হাত-পা। এদিকে, হত্যাকাণ্ডের আগে থেকেই গুদামঘরে একটি চৌবাচ্চা তৈরি করেছিল আসিফ। অল্প অল্প করে তাতে জলও জমায় সে। গুদামঘরে যাতায়াতের জন্য তৈরি করে একটি সুড়ঙ্গ। ঘটনার দিন সুড়ঙ্গের মাধ্যমে গুদামঘরে একে একে পাঁচজনকে নিয়ে যাওয়া হয়। চৌবাচ্চায় ফেলে দেওয়া হয় প্রত্যেককে। তবে আসিফের দাদা আরিফের জ্ঞান ফিরে আসে। ভাইয়ের সঙ্গে কোনওক্রমে মারামারি করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে কলকাতায় চলে যান আরিফ। এদিকে, আসিফ ওই চৌবাচ্চার উপরে সিমেন্ট, বালি চাপা দিয়ে দেয়। বাড়িতে স্থানীয়দের প্রবেশের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করে সে।
[আরও পড়ুন: ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত আরও ২ করোনা রোগীর মৃত্যু উত্তরবঙ্গে, বাড়ছে চিন্তা]
দু-একদিন আগে মালদহে ফিরে আসেন অভিযুক্তের দাদা। পুলিশকে গোটা ঘটনা জানায়। বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়িটিতে হানা দেয় পুলিশ। সকালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দেহ খুঁড়ে বের করা হয়। তারপরই গোটা ঘটনাটি সামনে আসে। পুলিশকে ভাইয়ের ‘কীর্তি’ জানাতে কেন চার মাস সময় নিলেন আরিফ, সেই প্রশ্নও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। অভিযুক্ত আসিফের ঘর থেকে বেশ কয়েকটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ল্যাপটপও মিলেছে। এছাড়াও বাড়ি থেকে কয়েক লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, সম্পত্তিগত বিবাদের জেরে খুন করা হয়েছে প্রত্যেককে। সেক্ষেত্রে মাত্র ১৯ বছর বয়সি আসিফের কেন এত টাকার প্রয়োজন হল, তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। আসিফকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পরই সমস্ত তথ্য সামনে আসবে বলেই মনে করছে পুলিশ।