সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: গঙ্গাসাগর যাওয়ার পথে ভুল বোঝাবুঝির জেরে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) তিন সাধুর আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘিরে তোলপাড় রাজ্য। বঙ্গের রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বাকযুদ্ধ শুরু হয়েছে যুযুধান বিজেপি-তৃণমূলের মধ্যে। এসবের মাঝে কিন্তু রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন পুরুলিয়ায় (Purulia) আক্রান্ত সাধু মধুর গোস্বামী। থানায় বসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি সাফ জানালেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েই তাঁদের বাঁচিয়েছে। নইলে গণপিটুনি মৃত্যু হতে পারত। অর্থাৎ বিজেপি ঘটনাটিকে যেভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছে, বিষয়টা তেমন নয়। তা এই সাধুর বয়ানেই স্পষ্ট।
ঘটনা ঠিক কী? স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশ থেকে তিন সাধু-সহ পাঁচজন গাড়িতে গঙ্গাসাগর (Gangasagar) যাচ্ছিলেন। মাঝপথে ওই গাড়িটি পুরুলিয়ার কাশীপুর থানার গৌরাঙ্গডি মোড়ে থামে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তিন তরুণী সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় গাড়ি নিয়ে তাঁদের পিছু ধাওয়া করেছিল ওই তিন গেরুয়া বসনধারী। ফলে ভয়ে ওই তরুণীরা সাইকেল ফেলে ছুটে পাশের একটি ইটভাটায় পৌঁছন। পরে ‘ছেলে ধরা’র গুজব রটতেই ওই গাড়ি ঘিরে ধরে এলাকার উত্তেজিত মানুষ। মারধর (Lynching) করা হয় বলে অভিযোগ। যদিও পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “ভাষাগত সমস্যার জন্য ভুল বোঝাবুঝি হয়। তার ফলেই তিন সাধুকে মারধর করে স্থানীয়রা। তবে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” এমনকী ওই তরুণী সাধুদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন বলে দাবি।
[আরও পড়ুন: বাজপেয়ীর বায়োপিক কি লোকসভা ভোটপ্রচারে বিজেপির অস্ত্র? মুখ খুললেন পঙ্কজ ত্রিপাঠী]
বঙ্গভূমে সাধুদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় বিজেপি (BJP) তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে রাজ্যের নেতারা শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে। কিন্তু এই রাজনৈতিক তরজার মাঝে আক্রান্ত সাধু মধুর সংবাদমাধ্যমে জানালেন, পুলিশ রক্ষাকর্তা। ওই রাতে গৌরাঙ্গডি মোড়ে যখন তাঁদের ঘিরে ধরে মারধর করছিল উত্তেজিত জনতা, তার ৫ মিনিটের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবং সাধুদের উদ্ধার করে। নইলে তাঁরা মারাই যেতেন। তবে আক্রান্ত সাধুদের বক্তব্য, অভিযুক্তদের শাস্তি চান না। নিরাপদে পুরুলিয়া থেকে গঙ্গাসাগর পৌঁছনোই উদ্দেশ্য।
[আরও পড়ুন: ৮ বছর ধরে নিখোঁজ বায়ুসেনার বিমান, অবশেষে মিলল সন্ধান!]
এনিয়ে বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তাঁর কথায়, ”উত্তরপ্রদেশের ওই সাধুই তো পুলিশের প্রশংসা করেছেন। পুলিশ এখানে অত্যন্ত দ্রুত পদক্ষেপ করেছে। আর ১৯৮২ সালে যখন বিজন সেতুর উপর আনন্দমার্গীদের হত্যা করা হয়েছিল, এত বড় ঘটনা সত্ত্বেও পুলিশের দেখা পাওয়া যায়নি। তাই বলছি, সাধুসন্তদের আমরা শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি। কিন্তু তাঁদের নিয়ে বিজেপি বেশি কথা বললে প্রতিবাদ করব।”
দেখুন ভিডিও: