সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: সাম্প্রদায়িক হিংসা নয়, ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে ঝামেলার জেরেই ভাঙা হয়েছিল ডায়মন্ড হারবারে ভাঙা হয়েছে কালীমূর্তি। বায়নার টাকা যাতে ফেরত না দিতে হয়, তাই পুরো বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক রঙ লাগিয়ে প্রচার করা হচ্ছিল। যোগ হয়েছিল রাজনৈতিক ইন্ধনও। এমনই দাবি পুলিশের। বুধবার এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, “সমাজমাধ্যমে যারা এই ঘটনা নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রকাশ করেছিলেন সেই সমস্ত বক্তব্য এখনই যদি মুছে দেওয়া না হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার রাতে ডায়মন্ডহারবারের রামনগর থানা এলাকার নুরপুর পঞ্চায়েতের মুকন্দপুর গ্রামে। এখানেই ঠাকুর তৈরির কর্মশালা রয়েছে প্রহ্লাদ সরদারের। রামনগর থানা খবর পায় যায় যে নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন মুকুন্দপুর এলাকাতে প্রহ্লাদের ওয়ার্কশপে চারটি কালীপ্রতিমা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর পাওয়া মাত্রই রামনগর পুলিশ এবং ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। শুরু হয় প্রহ্লাদ ও তাঁর সহকারীদের একটানা জিজ্ঞাসাবাদ। অন্যান্য সূত্র থেকেও খবর নিতে শুরু করে তারা।
[আরও পড়ুন: ‘ভারত বিদ্বেষী’ সুয়েলাতেই আস্থা ঋষির, তুমুল ক্ষোভের মুখে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী]
৩৬ ঘণ্টার মধ্যে এই ঘটনার কিনারা করে পুলিশ। প্রহ্লাদ ও তাঁর সঙ্গীরা দোষ স্বীকার করে নেয়। জেরার মুখে জানায়, কমিটির বরাতমতো প্রতিমা গড়তে পারেননি। তাই কমিটির লোকজন প্রতিমা নিতে অস্বীকার করে। তার উপর বায়নার টাকা ফেরতের চাপ ছিল। তাই প্রহ্লাদ, তাঁর ভাই প্রতাপ সরদার ও পুষ্পেন্দু বেরা মিলে প্রতিমাগুলি ভাঙচুর করে। এরপর সহানুভূতি আদায়ের জন্য পুরো বিষয়টি অন্যভাবে সাজিয়ে স্থানীয়দের জানায়। ঘটনার সময় তাঁরা সকলেই মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
অভিযোগ, বিষয়টির রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে ভাঙচুরের খবর একটি রাজনৈতিক দলের তরফে জেলাজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়। যার জেরে সাময়িক উত্তেজনাও তৈরি হয়। রাস্তা অবরোধের মতো ঘটনাও ঘটে। পুলিশের অবশ্য প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল। তদন্তে নেমে চক্রান্তের চিত্রনাট্য খুঁজে পান তদন্তকারীরা। গোটা ঘটনার পিছনে গেরুয়াবাহিনী তথা আরএসএস-এর হাত রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের পর্যবেক্ষণ, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে তৃণমূল সরকারের বদনাম করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই এই ঘৃণ্য চক্রান্তের জাল বোনা হয়েছিল। পুলিশের তৎপরতায় অবশ্য ষড়যন্ত্রের সেই জাল ছিন্ন করা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: প্রাপ্য অর্থ দিচ্ছে না রাজ্য! বন্ধ NCC’র নতুন ক্যাডেট ভরতি, কী জবাব অর্থমন্ত্রীর?]