সুকুমার সরকার, ঢাকা: একাধিক প্রেম। একের পর এক বিয়ের নেশায় মেতে উঠেছিলেন পুলিশের এসআই। করেছিলেন বাল্যবিবাহও। যার কোনও প্রমাণ রাখেননি। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। প্রথম স্ত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেওয়ার অভিযোগে ‘গুণধর’ পুলিশকর্মীর ঠাঁই হল শ্রীঘরে। খোয়াতে বসেছেন চাকরিও।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম রবিউল হোসেন। তাঁর বাড়ি কুমিল্লার বাঙ্গরাবাজার এলাকায়। খাতায় কলমে তিনি বন্দরনগর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সদরঘাট থানায় কর্তব্যরত। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে একাধিক প্রেম ও বিয়ে করে এখন রবিউল জেল খাটছেন কুমিল্লা কারাগারে। তাঁকে কাজ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, এসআই পদে যোগদানের এক বছর না যেতেই প্রশিক্ষণরত অবস্থায় চাকরিবিধি ভেঙে পাশের গ্রামের সাড়ে ১৬ বছরের খাদিজা আক্তারকে বিয়ে করেন রবিউল। বাল্যবিয়ের বিষয়টি এড়াতে কাবিননামা ছাড়াই বিয়ে করেন। রাখেননি কোনও প্রমাণ।
[আরও পড়ুন: দিল্লি ও ঢাকার প্রতি একই দৃষ্টি নয়, কোন কূটনৈতিক বার্তা রুশ রাষ্ট্রদূতের?]
তবে এখানেই শেষ নন। সেই বিয়ের এক বছর যেতে না যেতেই রবিউল প্রেমে পড়েন ফারহানা তিশা নামে এক কনস্টেবলের। ফেসবুকে দুজনের পরিচয় হয়েছিল। কর্তব্যরত অবস্থাতেই প্রেমের টানে চট্টগ্রাম থেকে খুলনায় ছুটে যান প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে। সেখানে গিয়ে ফাঁদে পড়ে তিশাকে বিয়ে করতে বাধ্য হন রবিউল। এর মাঝখানেই রবিউলের বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রী খাদিজার মা নার্গিস আক্তার বাদী হয়ে কুমিল্লার বাঙ্গরাবাজার থানায় মামলা করেন। এই মামলায় পুলিশের কাছে লিখিত জবানবন্দিতে রবিউল জানান,”খাদিজাকে বিয়ে করিনি। এর কোনও প্রমাণ নেই। আমার প্ররোচণায় সে আত্মহত্যা করেনি।”
এদিকে খাদিজার মা নার্গিস আক্তারের অভিযোগ, “রবিউলের পরিবারের জোরাজুরিতেই অল্প বয়সে মেয়েকে বিয়ে দিতে বাধ্য হই। রবিউল তখন বলেছিল, তার প্রশিক্ষণ চলছে, বিবাহের কাবিন করলে চাকরির ক্ষতি হবে। তার কথা বিশ্বাস করে কাবিন ছাড়াই সাদা কাগজে উভয়ের স্বাক্ষর নিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়। শর্ত ছিল, খাদিজার ১৮ বছর পূর্ণ হলে রবিউলের প্রশিক্ষণ শেষে ৫ লক্ষ টাকা কাবিনে বিয়ের রেজিস্ট্রি করা হবে। বিয়ের পর মোটরবাইক কেনার জন্য আড়াই লাখ টাকাও দিয়েছিলাম। এখন রবিউলের ফাঁদে পড়ে সবই হারালাম।” এই মামলাতেই রবিউলকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বিভাগীয় মামলার তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে খোয়াতে হবে চাকরিও।