গোবিন্দ রায়: ডাকাতি ও লুটপাটের উদ্দেশ্যেই খুন করা হয়েছিল কর্পোরেট কর্তা সুবীর চাকিকে। ঘটনার কথা জেনে ফেলায় তাঁর গাড়ির চালক রবিন মণ্ডলকেও খুন করে দুষ্কৃতীরা। গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়া রোড তথা গড়িয়াহাটের জোড়া খুনের (Gariahat Double Murder Case) ঘটনার ৮৭ দিনের মাথায় শুক্রবার আলিপুর আদালতে চার্জশিট পেশ করে এমনই দাবি করল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।
শুক্রবার আদালতে পেশ করা ৫০০ পাতার চার্জশিটে ধৃত ৬ অভিযুক্তেরই নাম রয়েছে। যার মধ্যে মূল অভিযুক্ত মিঠু হালদার ও তার ছেলে ভিকি হালদার। এছাড়াও অন্যতম অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছে বাপি মণ্ডল, জাহির গাজি, সঞ্জয় মণ্ডল ও শুভঙ্কর মণ্ডল। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির খুন, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, সম্মিলিতভাবে অপরাধ সংগঠিত করা, ডাকাতি ও খুনের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তরা সকলেই রয়েছেন জেল হেফাজতে। সরকারি কৌঁসুলি সৌরিষ ঘোষাল জানান, দ্রুত এই মামলার বিচারপর্ব শুরু হবে। তবে এদিন তদন্ত পক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানান তিনি।
[আরও পড়ুন: North Bengal Train Accident: ‘ঝাঁকুনির পর ব্রেক কষলাম, তারপরই…’ দুর্ঘটনার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানালেন বিকানের এক্সপ্রেসের চালক]
গত বছরের ১৭ অক্টোবর গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়া রোডে নিজের বাড়িতেই খুন হন কর্পোরেট কর্তা সুবীর চাকি ও তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডল। জানা যায়, গড়িয়াহাট থানা এলাকার কাঁকুলিয়া রোডে পৈত্রিক বাড়ি ছাড়াও কলকাতা ও নিউটাউনের বিভিন্ন বিলাসবহুল আবাসনে একাধিক ফ্ল্যাট ছিল কর্পোরেট কর্তা সুবীর চাকির। খড়গপুর আইআইটি ও জোকা আইআইএম থেকে পাস করা সুবীর ছিলেন নামী বেসরকারি সংস্থা কিলবার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। নিউটাউনের ফ্ল্যাটে থাকতেন স্ত্রী, মা ও শাশুড়িকে নিয়ে। ছেলে ব্রিটেনে কর্মরত, বিয়ের পর মেয়ে থাকেন বেঙ্গালুরুতে।
প্রথমে গড়িয়াহাট থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও পড়ে জোড়া খুনের ঘটনায় তদন্তভার হাতে নেয় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হোমিসাইড শাখার পুলিশ। খুনের অভিযোগে প্রথমে পুলিশের জালে ধরা পড়ে সুবীর চাকির বাড়ির প্রাক্তন পরিচারিকা মিঠু হালদার। পরে তার ছেলে ভিকির একাধিক সাগরেদ ধরা পড়লেও ভিকিতে খুঁজে পেতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। ভিকি ও তার এক সহযোগীকে মুম্বই থেকে পাকড়াও করে গোয়েন্দা বিভাগ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি খাল থেকে উদ্ধার করা হয় খুনে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রটি। পাশাপাশি উদ্ধার করা হয় কর্পোরেট কর্তার খোয়া যাওয়া আংটি, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড ও মোবাইল। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, জোড়া খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে অসংখ্য সিসিটিভি ফুটেজ ও পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা। ঘটনায় ৮০ জন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে।