স্টাফ রিপোর্টার: পঞ্জিকা (Panjika) দেখে শুভ কাজ শুরু করা বা কর্মসূচি চূড়ান্ত করা নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে মতভেদ চূড়ান্ত। জ্যোতিষী ও পাঁজি– এই দু’টির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রাজনৈতিক মহলের যোগ বহুদিনের। বামপন্থীরা পঞ্জিকার সঙ্গে আড়ি রেখে চললেও রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির নেতাদের মধ্যে পাঁজি ব্যবহার নিয়ে নববর্ষের দিনে চাপানউতোর চরমে পৌঁছে গিয়েছে।
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ তো ব্যক্তিগত জীবনে পাঁজির কোনও প্রভাব আছে বলে মানতে রাজি নন। উলটে বলেছেন, “ভগবান আমাকে একটা বিশেষ মেশিন দিয়ে অতি অল্প বয়সেই স্বর্গ-নরক, দুইই দেখিয়ে দিয়েছেন।” এরপরই মাস দেড়েক আগে প্রেস ক্লাবে খেলতে গিয়ে পা ভাঙার ঘটনা উল্লেখ করে কুণাল বলেন, “পঞ্জিকায় যদি লেখা থাকত যে আহত হব, হাড় ভাঙবে, তাহলে তো বুঝেসুজে পা ফেলতাম। ওসব কিছুই লেখা হয় না।”
[আরও পড়ুন: ১৬-২২ এপ্রিলের Horoscope: নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহটি কেমন যাবে আপনার? জেনে নিন রাশিফল]
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষও পাঁজিকে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে মানতে রাজি নন। তবে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দলীয় সহকর্মীদের কথা শুনে পাঁজি মেনে চলতে হয় বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, “রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অনেকে বলে এটা শুভ দিন, ওই দিনে করুন, পাঁজিতে অমুক দিনটি ভাল, সবার কথা শুনে চলতে হয়।” তাৎপর্যপূর্ণ হল, বামপন্থী দল ফরওয়ার্ড ব্লকের বাংলা কমিটির রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “পঞ্জিকা রাখতেই হয়, কারণ কোনও দিনে ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা উৎসব থাকলে সেদিন মিটিং মিছিল করি না। আমাদের পার্টিতে অশোক ঘোষ বেঁচে থাকাকালীনও পার্টি অফিসে নিয়মিত পাঁজি রাখতেন।”
পঞ্জিকায় অনেকেই দিন-মাস ধরে নানা মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের নির্ঘণ্ট দেখা একটা অভ্যাসে পরিণত করেছেন। কিন্তু পঞ্জিকায় প্রথমে যে দেশ ও রাজ্য নিয়ে জ্যোতিষীরা আগাম পূর্বাভাস দিয়ে থাকেন, তা এদিন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি নববর্ষের দুপুরে নয়া পঞ্জিকায় দেখিয়ে দেন, ভারতের রাশি হল মকর। আর পশ্চিমবঙ্গের রাশি মেষ। এ বছর মকর রাশি নিয়ে ভবিষ্যৎবাণী হল, দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনে কেন্দ্রীয় সরকার সফল হবে না। উলটোদিকে রাজ্যে মেষরাশির প্রভাবে বিরোধীরা শত চেষ্টা করেও বিন্দুমাত্র রেখাপাত করতে পারবে না।
যতই হইচই করুক না কেন, ভোটে বাম-বিজেপি-কং হারবেই– এই তথ্য তুলে কুণাল বলেন, “রীতিমতো ভয়ংকর থ্রিলারের মতো কাহিনি পঞ্জিকায় লেখা আছে।” রাজনীতি নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণীর প্রসঙ্গে নাম না করে মাস তিনেক আগে শুভেন্দু অধিকারী তারিখ ঘোষণার তথ্য নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেন তৃণমূল মুখপাত্র। বলেন, “ডিসেম্বর-জানুয়ারির নানা তারিখ দিয়ে মেলেনি। ওই পাজামা-পাঞ্জাবি পরা হাতুড়ে জ্যোতিষী সুপার ফ্লপ।” সাংসদ শান্তনু সেনের ব্যবহারিক জীবনেও পঞ্জিকার ভূমিকা নেই বলে দাবি করে বলেন, “ঈশ্বরের আশীর্বাদে সব দিনই শুভ।”